ধীরে ধীরে জমে উঠছে এশিয়ার কৌশলগত অঙ্ক। আবারও ভারত, চীন ও রাশিয়ার ত্রিপক্ষীয় জোট ‘আরআইসি’ সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছে মস্কো ও বেইজিং। এবার শুধু অর্থনৈতিক নয়, নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। চীন ইতোমধ্যে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, কোয়াড জোট ও ইউক্রেন যুদ্ধের পর তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে ভারসাম্য রাখতেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে রাশিয়া ও চীন।
রুশ বার্তা সংস্থা ইজভেস্তিয়ার তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই রুদেনকো জানান, ভারত ও চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং আরআইসি এর পুনরায় সক্রিয়তা রাশিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘এই কাঠামো শুধু কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিক থেকে নয়, বরং ব্রিকসেরও ভিত্তি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল’। একইসঙ্গে রুদেনকো আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে এই জোট নতুনভাবে কাজ শুরু করবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘চীন-রাশিয়া-ভারত সহযোগিতা শুধু এই তিন দেশের জন্য নয়, বরং আঞ্চলিক শান্তি ও বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্যও সহায়ক’। তিনি জানান, চীন এই কাঠামো এগিয়ে নিতে ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখতে প্রস্তুত।
বিশ্লেষকদের মতে, এই কৌশলগত পুনর্মিলনের পেছনে একাধিক ভূরাজনৈতিক হিসাব রয়েছে। চীন কোয়াড জোটকে নিজেদের প্রভাব বলয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখে, যেখানে ভারত যুক্ত থাকায় বেইজিং উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারতের ইউরোপের প্রতি ঝুঁকে পড়া রাশিয়ার জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে আরআইসি পুনরায় সক্রিয় করে এক নতুন রাজনৈতিক ভারসাম্য তৈরি করতে চায় মস্কো ও বেইজিং।
টিএ/