নিকুঞ্জ ২ কল্যাণ সমিতির সমাজ কল্যাণ নিযুক্ত প্রশাসক মোহাম্মদ ইনসান কর্তৃক নিকুঞ্জ মাঠের একাংশ দখল করে ফুড কার্ট নির্মাণকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। হাতেগোনা কয়েকজন প্রভাবশালী মুরব্বি এবং একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের কতিপয় সুবিধাবাদী নেতার যোগসাজশে এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষের মতামত উপেক্ষা করে মাঠের উত্তর পাশের একটি বিশাল অংশ ফুটপাতের অবৈধ ভাসমান হকারদের জন্য বরাদ্দ দেওয়ায় জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী এই নিন্দনীয় কার্যকলাপের প্রতিবাদে সম্মিলিতভাবে শীঘ্রই মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সমিতির অনির্বাচিত একজন প্রশাসক কোনোভাবেই জনগণের জন্য নির্ধারিত উন্মুক্ত এই মাঠ ভাসমান অবৈধ হকারদের বরাদ্দ দিতে পারেন না।
তারা আরও বলেন, "বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের আমলেও কেউ এই খেলার মাঠ দখলের সাহস কিংবা দুঃসাহস দেখাতে পারেনি। অথচ ৫ আগস্ট পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে শুধু দুঃসাহস দেখায়নি, অলরেডি মাঠ দখল করে বন্দোবস্তের নামে হকারদের বুঝিয়েও দিয়েছে।"
এলাকাবাসীর মতে, এই পদক্ষেপ কিছু মানুষের অদূরদর্শিতা এবং মাঠ দখলের সুযোগ করে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। ফুড কোর্টের জন্য বাঁশ দিয়ে স্থান নির্ধারণ করা হলেও, পূর্বের ৩০টি দোকান উচ্ছেদ করে সেই স্থানে নতুন করে কাপড় ও সবজির ভ্যানসহ আরও ৩০ জন হকার বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে শিশুদের খেলার জায়গা এবং এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এ প্রতিবেদককে বলেন,"মাঠ দখল করে বাচ্চাদের জায়গা কিছু বয়স্ক সিনিয়র মিলে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। উনাদের কাছে একটি আবাসিক এলাকার মানদণ্ড কী হওয়া উচিত, সেটা জরুরি নয়। আসলে উনাদের কাছে মাঠের প্রয়োজন কম, অথচ ভাসমান কিছু মানুষকে মাঠে বসিয়ে 'দাতা হাতেম তাই' সেজেছেন একেকজন। আবাসিক এলাকায় কোনো দিন এমন হতে দেওয়া যায় না।"
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যারা আজ মাঠ দখল করে এই অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে, ৮ মাস পর নির্বাচন এলে একটি দল এসে এদের থেকে চাঁদা তুলবে, ঠিক যেমনটি গত ১৭ বছর ধরে হয়ে আসছে। তখন এই মুরব্বিরা বাসায় ঘুমাবে এবং এই সরকারের সময় বসানো বলে কেউ এটি সরাতেও পারবে না, বরং বলবে এটাই বৈধ। আজ তারা বাচ্চাদের খেলার মাঠ কেড়ে নিল, কালকে বাকি মাঠও দলীয় লোকেরা দখল করবে। আজ ৭০ টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে, পরে তা ৫০০ টাকা হয়ে যাবে।
এলাকাবাসী আরও বলেন, "সেদিন কেউ ভয়ে বের হবে না। অথচ আজকে উনারা ভিডিও করে দেখাচ্ছেন। সেদিন উনারা হয়তো বেঁচে থাকবেন না, অথচ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হক নষ্ট করলেন উনারা আজকে।"
তারা নিকুঞ্জবাসীকে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করার আহ্বান জানিয়েছেন, অন্যথায় বলার কিছু নেই বলে উল্লেখ করেছেন। কল্যাণ সমিতি দীর্ঘদিন ধরে মাঠের মধ্যে বিয়ের রান্নাবান্নার আয়োজন করে আসছে, এলাকার সচেতন মহলের পক্ষ থেকে বারবার বলার পরেও তারা তা বন্ধ করেনি। এখন তারা যেন পুরো মাঠটাই গ্রাস করার উদ্যোগ নিয়েছে!
এই পরিস্থিতিতে নিকুঞ্জবাসী তাদের ন্যায্য অধিকার রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং যেকোনো মূল্যে মাঠকে দখলমুক্ত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এমআর/টিকে