মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে জাল পাসপোর্ট তৈরির একটি গোপন কারখানায় অভিযান চালিয়ে দুই বাংলাদেশিকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। অভিযানে শত শত জাল পাসপোর্ট ও ভুয়া সনদপত্র জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ভোরে কেপং এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালায় ইমিগ্রেশন বিভাগের এনফোর্সমেন্ট টিম।
কারখানাটিতে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের জাল পাসপোর্ট তৈরি করা হতো।
এ সময় মালয়েশিয়ায় কর্মরত বিদেশিদের জন্য প্রয়োজনীয় ফরেন ওয়ার্কার্স মেডিক্যাল এক্সামিনেশন মনিটরিং এজেন্সির (ফোমেমা) ভুয়া সনদপত্রও উদ্ধার করা হয়।
ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, এই সিন্ডিকেট প্রতিটি জাল পাসপোর্টের জন্য ৪০০ রিঙ্গিত করে চার্জ নিত। এমনকি অভিযানের সময় অভিযুক্তদের একজন মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই একটি ভুয়া পাসপোর্ট তৈরি করে দেখান।
আটক হওয়া দুই বাংলাদেশির একজন জানান, আমি দিনে ২০ থেকে ৩০টি পাসপোর্ট তৈরি করি। একটি পাসপোর্ট বানাতে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট লাগে। এগুলো আমি নিজের ইচ্ছায় করি না, বস যা বলছে তাই করি। আমি জানি না কার জন্য বানানো হচ্ছে।
তারা আরও দাবি করেন, মালয় ভাষা জানেন না এবং তারা শুধু কাজের বিনিময়ে প্রতি মাসে আড়াই হাজার রিঙ্গিত বেতন পেতেন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পাসপোর্ট তৈরির অর্ডার আসত হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে, এবং অর্থ লেনদেনও একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক অ্যাকাউন্টে হতো। ওই অ্যাকাউন্টের মালিকও একজন বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, সিন্ডিকেটটির পেছনে কে বা কারা আছে তা খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে। শিগগিরই জালিয়াত চক্রের মূলহোতাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে আরও অভিযান চালানো হবে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধু প্রবাসীদের সুনাম ক্ষুণ্ন করে না, বরং আন্তর্জাতিকভাবে দেশের ভাবমূর্তিও নষ্ট করে।
এফপি/ টিএ