ইরানে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) একটি প্রতিনিধি দলকে সফরের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে ‘উৎসাহিত’ হয়েছেন বলে শুক্রবার জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান রাফায়েল গ্রোসি।
গ্রোসি বলেছেন, ‘কারিগরি দলটির এই সফর জাতিসংঘের পরিদর্শকদের ইরানে ফেরার পথ খুলে দিতে পারে, যা এ বছরের মধ্যেই বাস্তবায়িত হতে পারে।’
তিনি সিঙ্গাপুর সফরকালে সাংবাদিকদের আরো বলেন, ‘আমরা যদি দ্রুত না ফিরলে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে, কারণ এটি ইরানের একটি আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা। তেহরান থেকে আমি যে ইঙ্গিত পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে তারা আমাদের সঙ্গে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে চায়—এটি আমাকে আশাবাদী করেছে।’
সফরের নির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি। তবে গ্রোসি নিশ্চিত করেছেন, এ সফর ‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই’ হবে।
এর একদিন আগে, ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি নিউইয়র্কে জাতিসংঘকে জানিয়েছেন, আইএইএর একটি প্রতিনিধি দল দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে ইরান সফর করবে।
গারিবাবাদি বলেন, ‘এ সফরে দলটি পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে প্রবেশাধিকার পাবে না।
তবে এটি জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থার সঙ্গে নতুন সম্পর্ক স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দেবে।’
ইউরোপীয় দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘনের অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়ার প্রেক্ষিতে ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানির সঙ্গে শুক্রবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠেয় বৈঠকের আগমুহূর্তে এক বক্তব্যে গারিবাবাদি বলেন, ‘যদি ইউরোপীয় দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, আমরা প্রতিক্রিয়া জানাব, আমরা জবাব দেব।’
গ্রোসি বলেন, ‘এ সফরকারী দলে এখনই কোনো পারমাণবিক পরিদর্শক থাকছে না। আমাদের আগে শুনে নিতে হবে, ইরান কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে চায়।
কিছু জায়গা ধ্বংস হয়েছে, আমাদের সেই পরিস্থিতিও পর্যালোচনা করতে হবে ও এরপরই নির্ধারণ করতে হবে কখন সুনির্দিষ্টভাবে পরিদর্শন শুরু করা যাবে।’
তেহরান সংস্থাটির সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করলে আইএইএর একটি দল জুলাই মাসের শুরুতে ইরান ত্যাগ করে সংস্থার সদর দপ্তর ভিয়েনায় ফিরে যায়।
ইরান জুন মাসে তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে সংঘটিত হামলার জন্য আইএইএকে আংশিকভাবে দায়ী করেছে। তবে ইসরাইল বলেছে, তারা এসব হামলা চালিয়েছে যাতে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, যদিও তেহরান বারবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত ২২ জুন, যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ফোর্দো, ইসফাহান ও নাতাঞ্জের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায়।
এ সপ্তাহে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেছেন, ‘স্থাপনাগুলোতে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির পরেও তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, বিশেষত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম ত্যাগ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।’
এফপি/ এসএন