গণতন্ত্র ধ্বংসকারীরা নানাভাবে চক্রান্তে মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার (২৭ জুলাই) সকালে নির্বাচন ভবনে ইসি সচিব আখতার আহমেদের কাছে দলের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যারা গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল; সেই দোসররা তো বসে নেই। তারা নানাভাবে নানান চক্রান্তে মেতে উঠেছে। এসব বিষয়গুলো চিহ্নিত করে যাতে নির্বাচনবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি কোনো ধরনের চক্রান্ত করতে না পারে ,সেটা দেখার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাবে সরকার এবং নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অবাধ করতে দায়িত্ব পালন করবে।’
রিজভী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের ওপর কর্তৃত্ব ও রাজনৈকি দল কীভাবে চলছে এবং তারা কী অবস্থায় আছে, সেটার বিষয়ে অভিভাবকত্ব করতে পারিনি আগের নির্বাচন কমিশনগুলো। এমন ব্যক্তিদের বাছাই করে নেওয়া হয়েছিল যারা অত্যন্ত দলমন্য এবং নির্দয়-নিষ্ঠুরভাবে লুটের নির্বাচন, বন্য নির্বাচন করেছে। ভোট করে রাত ৮টার মধ্যে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে তারা ঘোষণা দিতো। এসব মেরুদণ্ডহীন চাকরিলোভী লোকদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমরা ১৬-১৭ বছর ধরে নির্বাচন কমিশনকে সরকারের একটা অনুগত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখেছি। তারা তাদের স্বাধীনতাকে ভুলে গিয়ে শেখ হাসিনার পদলেহী একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা স্বাধীন বিচার বিভাগ, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন গণমাধ্যম সবগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘এ রকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের কাজ করতে হয়েছে। তার মধ্যেই আমাদের কণ্ঠকে জাগরিত করতে হয়েছে। আমাদের প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে নিয়ে শক্তি ও সাহস দিয়ে কণ্ঠ জোরালো করে রাখার চেষ্টা করেছি। যদিও অনেক নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক। জনগণ দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারিনি। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে জাদুঘরে পাঠিয়ে দিয়েছিলে শেখ হাসিনা। সেখান থেকে বর্তমান একটি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে এই কমিশন। অবাধ সুষ্ঠু ও ইনক্লুসিভ নির্বাচন করার জন্য তারা যাবতীয় কাজ করবে। এখন পর্যন্ত সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে যে স্বাধীনতা ও অধিকার দেওয়া আছে, সেই অধিকার দিয়ে নির্বাচনকে বানচাল করার যেকোনো গভীর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সাহসী ভূমিকা রাখবে বলে বিএনপি বিশ্বাস করে।’
রিজভী বলেন, ‘মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়তো এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ততোটা উন্নতি হয়নি, তারপরও মানুষের মধ্যে আশা জেগে উঠেছে, মানুষ মনে করে আমরা শেখ হাসিনার দুর্বৃত্তপরায়ন প্রশাসনের দ্বারা বা তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আর নীপিড়নের শিকার হবে না। আর কখনো তাদের রিমান্ডের নামে অকথ্য অত্যাচার করা হবে না। তারা গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হবে না।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের যে অব্যাহত যাত্রা, সেই যাত্রা অব্যাহত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনের গুরু দায়িত্ব আছে, সেই গুরু দায়িত্ব পালন করবে কমিশন। সকল রাজনৈতিক দল ও গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে একটা আস্থার প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে বলে এই প্রতিষ্ঠান এমনটিই বিএনপি প্রত্যাশা করে।’
এমকে/টিকে