আফিয়া সিদ্দিকীকে ‘জাতির কন্যা’ ঘোষণা করল পাকিস্তান

আফিয়া সিদ্দিকী—একটি নাম যা আজও পাকিস্তানের আকাশে ভেসে বেড়ায় বেদনার মেঘ হয়ে। বিশ্বখ্যাত হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি থেকে নিউরোসায়েন্সে ডিগ্রি অর্জনকারী, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গবেষণায় স্বীকৃত একজন মেধাবী কন্যা, কোরআনে হাফেজা—যার স্বপ্ন ছিল জ্ঞান দিয়ে সমাজ বদলে দেওয়া। সেই আফিয়া আজ যুক্তরাষ্ট্রের এক কারাগারে বন্দি।


২০০৩ সালে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর তার কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে ২০০৮ সালে তাকে আফগানিস্তানের গাজনি শহরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের আদালত তাকে ৮৬ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।


কিন্তু এই বিচারে ন্যায়বিচার কতটা পরিপূর্ণ ছিল, তা নিয়ে রয়েছে ব্যাপক প্রশ্ন। আদালতের ভাষ্য আর ঘটনাপ্রবাহের বাস্তবতার মধ্যে ছিল বিস্তর ফারাক। অনেকে মনে করেন, তিনি রাজনৈতিক ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের এক বলি। কেউ আবার বলেন, তার আসল অপরাধ ছিল একজন মুসলিম নারী বিজ্ঞানী হওয়া।

এক সময়ের গর্বিত মেধাবী আফিয়া সিদ্দিকী আজ শুধুই একটি কয়েদি নাম্বার। জাতি আজও ভুলে যায়নি তার ছোট ছোট সন্তানদের, যারা আজও মায়ের কোল ফিরে পাওয়ার আশায় দিন গুনছে।

সম্প্রতি নিউইয়র্কে প্রবাসী পাকিস্তানিদের এক সমাবেশে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, “ডাক্তার আফিয়া সিদ্দিকী আমাদের জাতির কন্যা। তার মুক্তি এখনো আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকার।” তিনি আরও জানান, আফিয়ার মুক্তির জন্য পাকিস্তান সরকার আন্তরিক ও মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসহাক দারের এই বক্তব্য এখনই হয়তো আফিয়ার মুক্তির দরজা খুলে দেবে না, তবে এটি নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের মানবিক মূল্যবোধের এক প্রতিচ্ছবি।

আফিয়ার গল্প কেবল একজন নারীর নয়। এটি একজন মা, একজন কন্যা, একজন মুসলিম নারীর মুক্তির আহ্বান। এটি একটি জাতির বিবেকের প্রশ্ন ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন।

পিএ/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
খসড়া দেয়া হয়েছে আজ বা কাল প্রাথমিক পর্যায়ের ঐক্যমতের খসড়া পৌঁছে দেয়া হবে: আলী রীয়াজ Jul 29, 2025
img
আপনারা পিআর পদ্ধতি বোঝেন না, তাহলে রাজনীতি করতে আসছেন কেন: চরমোনাই পীর Jul 29, 2025
img
মানুষের নিরাপত্তা দিতে না পারলে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না: মির্জা ফখরুল Jul 29, 2025
img
মাত্র ২১ বছর বয়সেই মা হলেন ‘মিশকা’ খ্যাত অহনা দত্ত! Jul 29, 2025
সিডনিতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার লেনদেন বিতর্ক: মাহফুজ আলম ও ভাইয়ের জবাব Jul 29, 2025
img
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়নি Jul 29, 2025
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে নৈরাজ্যের শঙ্কা, মাঠে সক্রিয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী Jul 29, 2025
img
ফের ‘মহিষাসুরমর্দিনী’ অবতারে কোয়েল মল্লিক, মহালয়ায় থাকছে বড় চমক Jul 29, 2025
img
‘ফাইজলামির একটা সীমা আছে’, মনগড়া খবরে ক্ষুব্ধ মৌ শিখা! Jul 29, 2025
img
ইকুয়েডরে বারে বন্দুকধারীদের হামলায় শিশুসহ প্রাণ গেল ১৭ জনের Jul 29, 2025
img
ফুরিয়ে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি! ২০ বছরের স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণে উদ্বেগ Jul 29, 2025
img
ভারতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ৯ জনের Jul 29, 2025
img
কিডনি বিক্রি করে হলেও স্বামীর বিরুদ্ধে লড়বেন অভিনেত্রী রিয়া! Jul 29, 2025
img
কেন স্বামী ভিকি কৌশলের ফোনে হাত দেন না ক্যাটরিনা? Jul 29, 2025
img
থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে স্বাগত জানাল বাংলা‌দেশ Jul 29, 2025
img
১৫ বছরের বিরতির ঘোষণা গার্দিওলার, জানালেন কারণ Jul 29, 2025
img
জুলাই ঘোষণাপত্রে ঐকমত্যের চেষ্টা চলছে: মাহফুজ আলম Jul 29, 2025
img
পৃথিবী থেকেই যেভাবে মহাকাশযানের ক্যামেরা মেরামত করলো নাসা Jul 29, 2025
img
বিজেপি ছেড়ে এবার মমতার দল থেকে ভোটে দাঁড়াবেন শ্রাবন্তী! Jul 29, 2025
img
অনেকের লেজ কাটা যাচ্ছে বলে আমার বিরুদ্ধে লেগেছেন : উপদেষ্টা মাহফুজ Jul 29, 2025