বাণিজ্য চুক্তি না হলে ভারতের রপ্তানি পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাঁচ দফা আলোচনার পরও চুক্তি চূড়ান্ত না হওয়ায় বাড়ছে নয়াদিল্লির ওপর চাপ। তবু আশা ছাড়ছে না ভারত। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হচ্ছে এবং আগামী মাসেই চুক্তির কাঠামো দাঁড়াতে পারে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, ভারতের জন্য শুল্কহার ২৫ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
এর জবাবে ভারতের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, আগামী আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে একটি মার্কিন প্রতিনিধিদল দিল্লি সফর করবে। তিনি বলেন, ‘আলোচনায় আমরা যথেষ্ট অগ্রগতি করেছি।
তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে বলা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০ থেকে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিতে পারেন। তবে এটি সাময়িক হতে পারে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’
এর মধ্যে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল আশাবাদী কণ্ঠে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। আমরা কিছু পণ্যে শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দিয়েছি।
পাশাপাশি অশুল্ক বাধা সহজীকরণেও কাজ করছি।’
তবে কৃষি ও দুগ্ধখাতের বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট-জিন-পরিবর্তিত সয়াবিন বা ভুট্টা আমদানি কিংবা দুগ্ধ খাত উন্মুক্ত করতে রাজি নয় ভারত।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র-ভারত দ্বিপাক্ষিক পণ্য বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ১২৯ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ভারতের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় ৪৬ বিলিয়ন ডলার।
চুক্তি নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন ‘বিশ্ব শুল্ক’ নামে একটি নতুন ব্যবস্থার কথা ভাবছে।
এতে প্রায় ২০০টি দেশকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক গুনতে হতে পারে। বর্তমানে এই হার গড়ে ১০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জামিসন গ্রিয়র জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্রুত চুক্তি নয়, বরং ভালো চুক্তি চান। তাই ভারতের সঙ্গে আরও আলোচনা প্রয়োজন।
এদিকে ভিন্ন প্রেক্ষাপটেও কৌশল পুনর্মূল্যায়ন করছে নয়াদিল্লি। ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর ওপর শুল্ক হুমকি, ডি-ডলারের ব্যবহার, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি এসব বিবেচনায় রেখে আপাতত নতুন কোনো প্রস্তাব দিচ্ছে না ভারত।
ভারতের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এমন একটি চুক্তি চাই, যেখানে রপ্তানিকারকেরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগীদের তুলনায় বিশেষ সুবিধা পাবে।’
বিশ্লেষকদের মতে, চুক্তি না হলে ভারতীয় রপ্তানিপণ্য গড়ে ২৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কের মুখে পড়তে পারে, যা ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, জাপান কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুলনায় অনেক বেশি।
পিএ/এসএন