মিয়ানমারে সম্ভাব্য নির্বাচনের যে পরিকল্পনা ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার ঘোষণা করেছে—সেই পরিকল্পনার সমালোচনা, প্রতিবাদ কিংবা নির্বাচন বানচালের জন্য কোনো পরিকল্পনা করলেই গ্রেপ্তার হতে হবে। গত কাল বুধবার এমন একটি আইন পাস করেছে জান্তা।
‘প্রোটেকশন অব মাল্টিপার্টি ডেমোক্রেটিক ইলেকশন ফ্রম অবস্ট্রাকশন, ডিসরাপশন অ্যান্ড ডেস্ট্রাকশন’ নামের এই আইনটি ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার পাস এবং কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারে রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট।
নতুন আইনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে— সরকারের নির্বাচন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে যে কোনো উসকানিমূলক বক্তব্য, সমালোচনা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ, সমালোচনামূলক লিফলেট বা প্রচারপত্র প্রকাশ ও বিতরণ অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
কোনো ব্যক্তি যদি সরকারের নির্বাচন পরিকল্পনার উসকানিমূলক সমালোচনা বা প্রতিবাদ করেন, সেক্ষেত্রে তার শাস্তি হবে সর্বনিম্ন ৩ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাবাস। কোনো সংগঠন, সংস্থা বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে এই অপরাধের সাজা হবে সর্বনিম্ন ৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাবাসের সাজা ভেঅগ করতে হবে।
এছাড়া নির্বাচনের সময় ব্যালট পেপার ধ্বংস, ভোটার-প্রার্থী-নির্বাচন কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা-ভাংচুর চালানো হলে অভিযুক্ত ব্যক্তি/গোষ্ঠীকে সর্বোচ্চ ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে সহিংসতা কিংবা হত্যার ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে মৃতুদণ্ড প্রদান করা হবে বলেও বলা হয়েছে আইনটিতে।
২০২০ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছিল—অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। দেশটির তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
অভ্যুত্থানের পরপরই গ্রেপ্তার হন সুচি, তার নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং এনএলডির বিভিন্ন স্তরের হাজার হাজার নেতাকর্মী। তাদের বেশিরভাগ এখনও কারাগারে আছেন।
গত ৮ মার্চ মিয়ানমারের পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেন জান্তাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। তার ঘোষণা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হবে মিয়ানমারে।
সূত্র : ফার্স্টপোস্ট
এসএন