এখন পর্যন্ত আমি কোনো জায়গায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয় দিইনি : সাদিক কায়েম

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির নেতা সাদিক কায়েম জুলাই আন্দোলনের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়ক ছিলেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকায় সংবাদ সম্মেলনে সাদিক কায়েমকে রাখা হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই মন্তব্যের পর গণমাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েম বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবের যদি কোনো মাস্টারমাইন্ড থাকে, জুলাই বিপ্লবের যদি কোনো নায়ক থাকে, তারা হচ্ছেন—আমাদের শহীদরা এবং আমাদের গাজীরা। তারা আমাদের রাস্তা দেখিয়েছে, তাদের স্যাক্রিফাইসের মাধ্যমে আজকে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছি।'

তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবটা ছিল এ দেশের আপামর ছাত্র-জনতার স্বতঃফূর্ত ক্ষোভের বিস্ফোরণ। যেখানে সব মতের মানুষ আমরা প্রত্যেকের পরিচয় ভুলে গিয়ে কমন গোল নিয়ে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য আমরা একত্রিত হয়েছি এবং যখন খুনি হাসিনা এ দেশ থেকে পালিয়েছে, পালানোর পরে সরকার ফরমেশন করা, সরকার ফরমেশন পরবর্তী এখন পর্যন্ত আমি কখনো কোনো জায়গায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কোনো কিছু দখল করা, কোনো কিছু আত্মসাৎ করা, সেটা একটা সিঙ্গেল ডকুমেন্ট আপনারা কেউ দেখাইতে পারবেন না।’

সাদিক কায়েম আরো বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের সময়ে আমাদের মূল সারির সমন্বয়করা যখন অনুপস্থিত ছিল, ১৯ তারিখ থেকে একদম ২ আগস্ট পর্যন্ত ওই সময় আমরা কিছু কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সেই সত্য কিছু ঘটনা আমার জায়গা থেকে আমি মাঝেমধ্যে নিয়ে এসেছি।

আপনারা জানেন যখন ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট হয়, কারফিউ জারি হয়—ওই দিন সব কিছু ডিসকানেক্টেড। তখন ৯ দফা ফরমেশন করা, আমাদের সেকেন্ড লেয়ারের সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করা, তাদের সেফ হোমে রাখার ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি সব মিডিয়া হাউসে এই ৯ দফা পৌঁছে দেওয়া এবং এই ১৯ তারিখ পর থেকে একদম ১ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের কর্মসূচি প্রণয়ন করা এবং সব অংশীজনের সঙ্গে আলাপ করা এসব অসংখ্য অংশীজনের সঙ্গে আমরা আলাপ করেছি। দেশি-বিদেশি অংশীজন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন মানবাধিকারকর্মী সবার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি এবং সবাই আমাদের সহযোগিতা করেছে।

এখন এই ঘটনাগুলো যদি আমরা জাতির সামনে না আনি তাহলে এর মাধ্যমে একটা হিস্ট্রিক্যাল করাপশন হবে এবং এ রকম হাজারো ঘটনা আছে।

এর মধ্যে আমরা কয়েকটা ঘটনা জানি। ইতিহাসের দায় থেকে আমরা আশা করছি, সব ঘটনাগুলো জাতি জানবে ইনশাআল্লাহ। ৫ আগস্টের পরে দেখতে পাইছি, ক্রুশিয়াল টাইম ১৯ তারিখ থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত যারা অনেকে গুমের নাটক করেছিল, অনেকে আত্মগোপনে ছিল অথবা অনেকে ওই সময় আন্দোলন ম্যানেজ করে ক্যাম্পাস খুলে আন্দোলন কথা বলেছিল, ওই পক্ষ এখন ৫ আগস্টের পর দেখা যাচ্ছে মহাবিপ্লবী হয়ে গেছে।

৫ আগস্টের পর থেকে আগস্টের পুরো মাস, সেপ্টেম্বর মাস, অক্টোবর মাসজুড়ে আমরা আহত পরিবার এবং শহীদ পরিবার প্রত্যেকের সঙ্গে আমরা দেখা করেছি।

তাদের ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করা, তাদের ফ্যামিলির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এই কাজগুলো তখন আমরা করেছি। জুলাই আন্দোলনে ওই সময়ে সবার যে অংশীজন ছিল, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের মাদরাসা শিক্ষার্থী এবং অন্য যে অংশীজন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্নার করে দেওয়া হয়েছিল। তো এ রকম অসংখ্য ঘটনা আমরা সবাই জানি। তো এটা খুবই অপ্রত্যাশিত, যখন আমরা দেখতে পাই আমাদের জুলাইয়ের যোদ্ধারা বিভাজনমূলক আচরণ করে এবং তারা ক্রেডিটটাকে শুধুমাত্র একটা পক্ষের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

সুতরাং এর মাধ্যমে একটা বড় একটা সংকট তৈরি হয় এবং এটা শহীদদের সাথে একটা সুস্পষ্ট গাদ্দারি হয়। আমরা আশা করব, এই জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। আমাদের মধ্যে মতের অমিল থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রশ্নে জুলাইয়ের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসঙ্গে কাজ করব।

এমআর/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

ট্রাম্পের ১০০% শুল্ক হুঁশিয়ারিতে ভারতের রুশ তেল আমদানি বন্ধ Aug 01, 2025
কলকাতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বাংলাদেশি মডেল শান্তা পাল Aug 01, 2025
img
ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ইসির আরও ৫২ কর্মকর্তা বদলি Aug 01, 2025
শুল্ক আলোচনায় কূটনৈতিক জয়, প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন বার্তা Aug 01, 2025
অবশেষে বাংলাদেশের ওপর শুল্ক কমাল যুক্তরাষ্ট্র, আরোপ হচ্ছে ২০ শতাংশ Aug 01, 2025
img
কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাদ ধস, ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন Aug 01, 2025
১৯ বিষয়ে ঐকমত্য এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে জানালেন আলী রীয়াজ Aug 01, 2025
img
আইপিএল ও বিগ ব্যাশ দেখে নতুন শট শেখেন আরিফুল Aug 01, 2025
img
বার ডান্সার থেকে হয়ে উঠলেন একাধিক ব্লকবাস্টার সিনেমার চিত্রনাট্যকার Aug 01, 2025
img
রাশিয়াকে যুদ্ধে সহায়তা করছে ভারত : যুক্তরাষ্ট্র Aug 01, 2025
img
বলিউড থেকে দক্ষিণ, সবখানেই রাজত্ব করছেন ম্রুণাল ঠাকুর Aug 01, 2025
img
শুল্ক কার্যকর পিছিয়ে গেল ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে Aug 01, 2025
img
ওটিটিতে মুক্তি পেল হাউসফুল ফ্র্যাঞ্চাইজির পঞ্চম ছবি Aug 01, 2025
img
২৫০ কোটির স্বপ্নের বাংলো প্রস্তুত,গৃহপ্রবেশের তোড়জোড় নীতু-আলিয়ার Aug 01, 2025
img
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে: গোলাম পরওয়ার Aug 01, 2025
img
জুলাইয়ের বেতন দেরিতে পাবেন শিক্ষক-কর্মচারীরা Aug 01, 2025
img
বিশ্বকাপ নিয়ে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের জন্য বড় দুঃসংবাদ Aug 01, 2025
img
নতুন ধারাবাহিকে ফিরছেন শ্রুতি দাস, নায়ক কে? Aug 01, 2025
img
আবার বাড়ল মুরগির দাম, মাছের বাজার স্থিতিশীল Aug 01, 2025
img
রেইনকোট দেখে বাবাকে শনাক্ত করলেন জেলের ছেলে Aug 01, 2025