যুক্তরাষ্ট্রকে যে কৌশলে আটকাতে চাইছে ইরান

পরমাণু আলোচনায় ফেরার আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে ইরান। তেহরান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, শুধু আলোচনায় বসলেই হবে না, আগের আগ্রাসনের ব্যাখ্যা ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া সাধারণ অবস্থায় ফেরার প্রশ্নই ওঠে না।

তেহরানে ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেন, তারা আমাদের আক্রমণ করল, তখন তো আমরা আলোচনার মধ্যেই ছিলাম। এখন তারা যদি সত্যিই আলোচনায় ফিরতে চায়, তাহলে তার আগে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং নিশ্চয়তা দিতে হবে, এ রকম আর হবে না।

চাপ তৈরির কৌশল
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যতক্ষণ না যুক্তরাষ্ট্র আস্থা ফিরিয়ে আনার মতো বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছে, ততক্ষণ আলোচনা সামনে এগোবে না ইরান। অর্থাৎ, ইরান চাইছে দায় স্বীকার, ক্ষতিপূরণ এবং ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা এই তিন ধাপ পূরণ না হলে যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনায় বসার বৈধতা দেওয়া যাবে না।

বিশ্লেষকদের মতে, এটিই ইরানের চাপের কৌশল। একদিকে তারা এখনো স্টিভ উইটকফের সঙ্গে অপ্রত্যক্ষ যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে জনগণের তীব্র বিরোধিতা ও বিশ্বাসভঙ্গের প্রসঙ্গ তুলে নিজেদের অবস্থান আরও কঠোর করছে।

পূর্ববর্তী হামলার প্রেক্ষাপট
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে হামলা চালিয়ে একাধিক সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়,যা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এর জবাবে ইরানও দখলকৃত ফিলিস্তিন ও কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি আল-উদাইদে পাল্টা হামলা চালায়।

২২ জুনের মধ্যে ইরানের পাল্টা আঘাতে ইসরায়েল অস্ত্রবিরতির অনুরোধ করে। ফলে ছয় নম্বর আলোচনা, যা ১৫ জুন ওমানে হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল হয়।

আলোচনায় ফেরা, কিন্তু শর্তসাপেক্ষে
আরাকচি বলেন, “আলোচনার পথ সংকীর্ণ হলেও একেবারে বন্ধ নয়। কিন্তু এ পথের শুরুর দিকটা ওদের (যুক্তরাষ্ট্র) সদিচ্ছার মাধ্যমে হতে হবে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র এখনো শূন্য মাত্রার সমৃদ্ধকরণ চায়, তবে আলোচনার কোনো ভিত্তি থাকবে না।

ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিও হুঁশিয়ারি
ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানিকে লক্ষ্য করে আরাকচি বলেন, যদি তারা ‘স্ন্যাপব্যাক’ মেকানিজম চালু করে, তাহলে এটা হবে আলোচনার শেষ। কারণ তারা কোনো নিষেধাজ্ঞা তুলতে পারে না, কোনো বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারে না।

তথ্যসূত্র : তাসনিম নিউজ এজেন্সি

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মুসলিম দেশ কাজাখস্তানের আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেওয়ার কারণ Nov 07, 2025
img
মন ভালো রাখলেই শরীর ভালো থাকবে: অক্ষয় কুমার Nov 07, 2025
img
একটি দল ধর্মের নামে ব্যবসা করে দেশের স্বাধীনতা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে : মির্জা আব্বাস Nov 07, 2025
img
একটি রাজনৈতিক দল জোট বানিয়ে গণভোটের চাপ সৃষ্টি করছে : মির্জা ফখরুল Nov 07, 2025
আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার উপায় | ইসলামিক টিপস Nov 07, 2025
img
আবারও আরেক দক্ষিণি ছবির ঝড়, ৭ দিনে ৫০ কোটি পার Nov 07, 2025
আপনি কি এই বিউটি সম্পর্কে জানেন? | ইসলামিক প্রশ্নোত্তর Nov 07, 2025
img
নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হতে হবে : মির্জা ফখরুল Nov 07, 2025
সপ্তাহের যে ২টি দিন গুরুত্বপূর্ণ | ইসলামিক জ্ঞান Nov 07, 2025
‘দ্য গার্লফ্রেন্ড’ প্রচারে রাশমিকার বিস্ফোরক মন্তব্য Nov 07, 2025
জাফার জ্যাকসনের অভিনয়ে পুনর্জন্ম মাইকেল জ্যাকসনের Nov 07, 2025
টিনেজ থেকে পঞ্চাশ, পরীমনির অভিনয় যাত্রা দর্শকদের মুগ্ধ করবে Nov 07, 2025
অ্যাঙ্গোলার বিপক্ষে স্কোয়াডে নতুন মুখে উচ্ছ্বসিত ভক্তরা Nov 07, 2025
কোচ-ম্যনেজারদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ Nov 07, 2025
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র Nov 07, 2025
বাংলাদেশ সীমান্তে সেনা মোতায়েন জোরদার করছে ভারত Nov 07, 2025
নির্বাচনের মাঠে যেভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন হাদি! Nov 07, 2025
"গত ১৭ বছর আমরা এখানে আসতে পারিনি!" Nov 07, 2025
ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই ভোট: প্রেস সচিব Nov 07, 2025
ছাত্রদের হাতে নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়া নিয়ে যা বললেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর | Nov 07, 2025