রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ২১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সিটিটিসি এবং বিভিন্ন থানা পুলিশ সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- আওয়ামী লীগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, ঠাকুরগাঁও জেলার পীড়গঞ্জ থানা যুবলীগের সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিন (৩৫), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানা পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি বোরহান উদ্দিন আহম্মেদ (৭০), শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের ২০ নং ওয়ার্ড জয়েন্ট সেক্রেটারি মো. ইব্রাহীম (৬২), বনানী থানা ২০ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর উত্তর এর সদস্য মো. বাদশা খান (২৯), ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক (২৭), আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি ও বন ও পরিবেশ বিষয়ক কমিটির সদস্য সাব্বির মজুমদার (৪৩), ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কাঠালিয়া থানার রামপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. জাকির হোসেন ফরাজী (৫৩)।
ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোর্শেদ (৫১), ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান হিটলু (৪৮), উত্তর খান থানা আওয়ামী লীগের কার্যপরিষদের সদস্য ও ঢাকা উত্তর আওয়ামীলীগ কাচকুড়া ইউনিটের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম (৫০), ছাত্রলীগের বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম (৩৩), ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রাক্তন সদস্য মইনুল হোসেন সুমন (৪৮), উত্তরখান থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আজিজুল হক (৪৫), বংশাল থানার কায়েতটুলী শাখা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. রকি ওরফে রায়হান ওরফে রুকু (৩৩), ঝালকাঠি জেলার ঝালকাঠি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝালকাঠি পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
ঢাকা দক্ষিণ মহানগরীর আওয়ামী মৎসজীবী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহমুদ শিকদার (৪৭), ছাত্রলীগের উত্তরা পুর্ব থানা ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক হামীম আহমেদ ওরফে মিনহাজুল আবেদিন, ঢাকা জেলা আওয়ামী তথ্য-প্রযুক্তি লীগের সাধারণ সম্পাদক সান মোহাম্মদ (৪২), শ্যামপুর থানা ৫৪নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি সায়মন রহমান (৪২) ও খিলগাঁও থানা ১নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. আল মামুন সরকার (৪৪)।
তালেবুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারদের অনেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য রয়েছে। এছাড়া যারা বিভিন্নভাবে অপরাধে সংঘটিত হয়ে প্রকাশ্যে বা গোপনে আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ডিএমপি বদ্ধপরিকর।
রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠকে গ্রেপ্তারদের প্রসঙ্গে এবং মামলার অগ্রগতির বিষয়ের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত ৮ জুলাই ভাটারা থানার বসুন্ধরা এলাকার একটি কনভেনশন হলে বৈঠকের তথ্য পাওয়ার পর আমরা কার্যক্রম শুরু করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৩ জুলাই ভাটারা থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলায় ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় জড়িত অন্য যারা আছেন তাদের গ্রফতার করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, কী উদ্দেশে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজন করেছিল, এখানে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র ছিল কি না- এ বিষয়গুলো আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি।
এ ঘটনায় আর কোনো গ্রেপ্তার আছে কি না- জানতে চাইলে তালেবুর রহমান বলেন, ওই প্রশিক্ষণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তারা লোকজন জড়ো করেছিল। এ মামলায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই মামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে অভিযোগের ভিত্তিতে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। ওইখানে তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে জড়ো হয়ে ষড়যন্ত্রমূলক কিছু করার অপচেষ্টা করেছিল, সে ভিত্তিতেই আমরা তদন্ত অব্যাহত রেখেছি।
এ ঘটনায় কারা কারা জড়িত আছে সে বিষয়েও তদন্ত চলছে বলে জানান ডিএমপির এ কর্মকর্তা।
কেএন/টিএ