গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন কোথাও দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান : প্রত্যয় ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সেলিমা রহমান বলেন, ‘জুলাই সনদ ঘোষণার পরই আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হবে। তবে এটুকু স্পষ্ট করে বলতে চাই, আবারও সংগ্রামের সময় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি সুন্দর দেশ, স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। সেই বাংলাদেশের আজকে ৫৪ বছর হলো। সেই বাংলাদেশে আমরা দেখেছি, যতবার আমরা গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় অগ্রসর হচ্ছি, ততবারই কিছু না কিছু বাধা এসে আমাদেরকে বিব্রত করছে।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্র গঠন করি কেন? রাষ্ট্রে আমরা কী চাই? রাষ্ট্রে আমরা সুশাসন চাই, রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার চাই, অর্থনৈতিক অধিকার চাই। সবচেয়ে বড় কথা, মৌলিক অধিকার এবং বেঁচে থাকার অধিকার চাই।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘আমাদের জাতি এতটাই সংগ্রামী যে, কোনো বাধাই আমাদের থামাতে পারেনি। প্রতিবারই আমরা গণতন্ত্রের পথে একধাপ এগিয়েছি। সর্বশেষ ১৬ বছরব্যাপী আন্দোলনের ফসল হলো জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পতিত আওয়ামী লীগ সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘একটা চরম দানব সরকারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি, যারা মানুষের পেটে লাথি মেরে উন্নয়নের কথা বলে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুঁজি করে দেশ চালাতে চেয়েছে। সেই দানবীয় সরকারের পতন ঘটেছে গণঅভ্যুত্থানে। শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চলার পর সমগ্র জাতি রাজপথে নেমে এসেছিল। ছাত্র, জনতা, শ্রমিক, নারী, পুরুষ, শিশুরাও। দেশজুড়ে এক অনির্ধারিত যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের অবস্থা হলো, যারা একসময় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিক্রি করে স্বৈরাচার চালিয়েছিল, তারাই আবার এখন গণঅভ্যুত্থানের নামে ক্ষমতায় আসীন হতে চায়।’
সভাপতির বক্তব্যে গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে না। সরকার নির্বাচন নিয়ে অন্য খেলা খেলতে চাইলে, এর পরিণতি ভালো হবে না। জনগণ আবার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।’
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ড. কামাল হোসেনের লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শুনান। গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. কামাল হোসেন অসুস্থতাজনিত কারণে সভায় উপস্থিত হতে পারেননি।
গণফোরামের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ মধুর সঞ্চালনায় এতে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণফোরামের সভাপতিপরিষদ সদস্য অ্যাড. এ.কে.এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, অ্যাড. সেলিম আকবর ও অ্যাড. সুরাইয়া বেগম বক্তব্য রাখেন।
পিএ/টিএ