আমেরিকার অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে, বিশেষ করে H-1B ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে। নতুন করে এই ভিসাধারীদের জন্য উদ্বেগ তৈরি করেছে গ্রেস পিরিয়ডে 'নোটিস টু অ্যাপিয়ার' (NTA) পাঠানোর ঘটনা, যা অভিবাসন প্রক্রিয়ায় অপসারণের প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচিত হয়।
সাধারণত, যারা এইচ-১বি ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত, তারা চাকরি হারালে নতুন চাকরি খোঁজা বা অভিবাসন স্ট্যাটাস পরিবর্তনের জন্য ৬০ দিনের সময়সীমা পান। এই গ্রেস পিরিয়ডে তারা বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে পারেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে, অনেকেই এই সময়সীমার মধ্যেই হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (DHS) কাছ থেকে NTA পাচ্ছেন, যা তাদের দেশে ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু করতে বাধ্য করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ইউএসসিআইএস (USCIS)-এর প্রচলিত নীতির পরিপন্থী। অনেকেই যথাসময়ে স্ট্যাটাস পরিবর্তনের জন্য আবেদন করলেও তাদের বিরুদ্ধেই এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এতে H-1B ভিসাধারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা এবং মানসিক চাপ বাড়ছে।
এরই মধ্যে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, যা মোট শুল্ক হার ৫০%-এ পৌঁছেছে। তার অভিযোগ, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করাতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ভারতের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আসছে।
H-1B ভিসা নিয়ে ট্রাম্প শিবিরের বিতর্কিত অবস্থানও নতুন করে সামনে এসেছে। কংগ্রেসওম্যান মার্জরি টেলর গ্রিন একটি পোস্টে ভারতীয় এইচ-১বি কর্মীদের কারণে আমেরিকান নাগরিকরা চাকরি হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তার আহ্বান, H-1B প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হোক।
নতুন নীতিমালার আওতায় ফরেন লেবার অ্যাকসেস গেটওয়ে (FLAG) সিস্টেম থেকে পুরনো আবেদন বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে। এতে H-1B ছাড়াও H-2A, H-2B, E-3 এবং পার্মানেন্ট লেবার সার্টিফিকেশন (PERM)-এর আবেদন বাতিল হচ্ছে। এতে বিদেশি কর্মীদের মধ্যে আরও জটিলতা তৈরি হচ্ছে।
অভিবাসন আইনজীবীদের মতে, H-1B ভিসাধারীদের এখন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের পরামর্শ:
যত দ্রুত সম্ভব স্ট্যাটাস পরিবর্তনের আবেদন করতে হবে
সমস্ত কাগজপত্র ও রসিদ সংরক্ষণ করতে হবে
নিয়মিত ইউএসসিআইএস কেস স্ট্যাটাস ও মেইল চেক করতে হবে
NTA পেলে অবিলম্বে আইনি সহায়তা নিতে হবে
বিশ্লেষকদের ধারণা, ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি এবং অভিবাসন ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত হাজার হাজার ভারতীয় পেশাজীবীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
টিকে/