বাংলাদেশের মেয়েদের কাছে পাত্তাই পেল না পূর্ব তিমুর। এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পূর্ব তিমুরকে দুই হালি গোলে বিধ্বস্ত করলো লাল সবুজরা।
তৃষ্ণার হ্যাটট্রিকে শুক্রবার (৮ আগস্ট) ৮-০ গোলের বড় জয় পেয়েছে পিটার বাটলারের শিষ্যরা। স্বপ্ন রানি ,সাগরিকা, সিনহা শিখা ও শান্তি মার্ডি একটি করে গোল করেছেন।
আগামী বছরের এপ্রিলে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ। মূল পর্বে জায়গা নিশ্চিত করতে লাওসে বাছাইপর্বে লড়ছে বাংলার মেয়েরা। ‘এইচ’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক লাওসকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছিল আফঈদা-সাগরিকারা। এবার তারা উড়িয়ে দিলো পূর্ব তিমুরকে।
পুরো ম্যাচে আধিপত্য করে প্রতিপক্ষের জালে গুনে গুনে ৮টি বল জড়িয়েছেন তৃষ্ণা-সাগরিকারা। এর মধ্যে ৪টি প্রথমার্ধে আর বাকি ৪টি দ্বিতীয়ার্ধে। তবে ম্যাচে প্রথম গোল পেতে বেশ সংগ্রাম-ই করতে হয় পিটার বাটলারের শিষ্যদের। অপেক্ষা করতে হয় ২০তম মিনিট পর্যন্ত। দলকে প্রথম গোলটি এনে দেন সিনহা শিখা। কর্নার থেকে স্বপ্না রানীর ক্রস গোলমুখে পেয়ে হেডে জালে জড়ান সিনহা শিখা।
৩২তম মিনিটে অবিশ্বাস্য গোলে বাংলাদেশকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন শান্তি মার্ডি। কর্নার থেকে এ মিডফিল্ডারের নেয়া ক্রস সরাসরি দূরের পোস্টের কোণ দিয়ে জালে জড়ায়। তাকিয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করার ছিল না তিমুরের গোলরক্ষকের। তিন মিনিট পর তৃতীয় গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। কর্নার থেকে শান্তির মার্ডির নেয়া ক্রস গোলমুখে পেয়ে হেডে জালে জড়ান ডিফেন্ডার নবিরন খাতুন।
বিরতিতে যাওয়ার আগে যোগ করা সময়ে বক্সে সাগরিকার পাস পেয়ে আলতো ছোঁয়ায় জালে জড়ান অরক্ষিত থাকা শ্রী মতি তৃষ্ণা।
দ্বিতীয়ার্ধের ৫৭তম মিনিটে সিনহা শিখার শট তিমুরের গোলরক্ষকের হাতে লেগে লক্ষ্যচ্যুত হয়ে বারে আঘাত করে। বল নাগালে পেয়ে ফিরতি শটে জালে জড়াতে দেরি করেননি তৃষ্ণা। ৭৩তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার থেকে বল কেড়ে নিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে গোল আদায় করে নেন সাগরিকা। ৮২তম মিনিটেও নৈপুণ্য দেখান এ ফরোয়ার্ড।
মাঝমাঠ থেকে একাই বল টেনে দ্রুত গতিতে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সাগরিকা। তবে গোলরক্ষকের বাধায় ঠিকঠাক শট নিতে ব্যর্থ হন তিনি। বল পেয়ে জান তৃষ্ণা। আলতো ছোঁয়ায় জালে জড়িয়ে তুলে নেন হ্যাটট্রিক।
নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা সময়ে বক্সের অনেক দূরে থেকে দুর্দান্ত একটি ফ্রি-কিক নেন স্বপ্না রানী। বল বারের উপরের অংশে লেগে লাইনের ভেতরে স্পর্শ করে বাইরে চলে আসে। শুরুতে রেফারি গোলের আবেদনে সাড়া না দিলেও পরে ভিআর চেকে বাংলাদেশের পক্ষে ফল জানান। তাতে ৮-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল সবুজরা।
টানা দু্ই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে বাংলাদেশ। একই গ্রুপে সন্ধ্যায় লাওসের বিপক্ষে মাঠে নামবে শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া। স্বাগতিকদের হারালে তারা আবার শীর্ষ স্থানে ফিরে যাবে। সেক্ষেত্রে ১০ আগস্ট বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যাচেই নির্ধারণ হবে কে হচ্ছে গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন।
বাছাইয়ের আট গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি জায়গা পাবে মূলপর্বে। তাই প্রতিটি ম্যাচেই জয় গুরুত্বপূর্ণ লাল সবুজদের জন্য। অবশ্য আট গ্রুপ থেকে সেরা তিন রানার্সআপও সুযোগ পাবে মূলপর্বে। তবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলে সে সুযোগটা অনিশ্চিত-ই থাকবে সাগরিকাদের জন্য।
টিকে/