ইসরাইলে সামরিক সরঞ্জাম রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল জার্মানি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যায় ব্যবহৃত হতে পারে ইসরাইলে এমন সামরিক সরঞ্জাম রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। ইসরাইলের পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনার পর শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক ঘোষণায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস।

প্রায় দুই বছর সামরিক আগ্রাসনের পর এবার গাজা পুরোপুরি দখলে নেয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বহির্বিশ্বের তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) তার মন্ত্রিসভা অনুমোদনও করেছে।

এরপরই জার্মান চ্যান্সেলর ইসরাইলে সামরিক সরঞ্জাম রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘জার্মান সরকার মনে করে, গত রাতে ইসরাইলি মন্ত্রিসভা গাজা উপত্যকায় আরও কঠোর সামরিক পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই লক্ষ্যগুলো অর্জন ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে।’

তিনি বলেন,
এই পরিস্থিতিতে জার্মান সরকার পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম রফতানির অনুমোদন দেবে না।

জার্মানি ইসরাইলের অন্যতম শক্তিশালী মিত্র। হলোকাস্টের কারণে ইসরাইলের প্রতি বার্লিনের কূটনৈতিক সমর্থনকে প্রায়শই ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।

গাজায় সামরিক আগ্রাসনেও বরাবর সমর্থনের পাশাপাশি অস্ত্র সরবরাহ করে গেছে জার্মানি। যুক্তরাষ্ট্রের পরে জার্মানিই ইসরাইলে দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক দেশ।

সমরাস্ত্র গবেষণা সংস্থা স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট সিপ্রির মতে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরাইলের অস্ত্র আমদানির ৩৩ সরবরাহ করেছে জার্মানি।

যুক্তরাষ্ট্র সরবরাহ করেছে ৬৬ শতাংশ। জার্মানির অস্ত্রের মধ্যে নৌ সরঞ্জামই (ফ্রিগেট, টর্পেডো) প্রধান। তবে সাঁজোয়া যান, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র এবং গোলাবারুদও রয়েছে।


গত জুন মাসে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের আগে ভাষণ দিতে গিয়ে চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো ইসরাইলের অস্তিত্ব রক্ষা করা’।

দেশটির এমন অবস্থান সত্ব্বেও গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে এমন সামরিক অস্ত্র রফতানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

টিকে/

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রায়ের পর কিছু সহিংসতা হলেও তা বাড়বে না : সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত Nov 17, 2025
img
ইতিহাসে বিচারের মুখোমুখি হওয়া রাষ্ট্রপ্রধানরা Nov 17, 2025
img
গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের হজে নিষেধাজ্ঞা, ফেরত পাঠাবে সৌদি আরব Nov 17, 2025
img
ট্রাইব্যুনালের এজলাসে পৌঁছেছেন প্রসিকিউশন টিম ও আইনজীবী Nov 17, 2025
img
কাতারের দোহার মঞ্চে ‘অস্বস্তিকর’ হয়ে উঠল সালমান-তামান্নার নাচ! Nov 17, 2025
img
ধানমন্ডি ৩২-এ নেওয়া হচ্ছে দুটি বুলডোজার Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে রায় কার্যকরের দাবি শহীদ মিরাজের বাবার Nov 17, 2025
img
চোটে পড়ে ছিটকে গেলেন ড্যারেল মিচেল Nov 17, 2025
img
একটি ন্যায্য বিচার নিশ্চিত হবে, জাতি অপেক্ষায় আছে: মির্জা ফখরুল Nov 17, 2025
img
বিএনপির রাজনীতির তিন প্রজন্ম মাওলানা ভাসানীর কাছে ঋণী : আলাল Nov 17, 2025
img
মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২ জন ওমরাহ যাত্রী নিহতের শঙ্কা Nov 17, 2025
img
হাসিনার রায় ঘোষণায় রাজধানীর নিরাপত্তায় ডিএমপির ১৫ হাজার পুলিশ সদস্য কাজ করছে : অতিরিক্ত কমিশনার Nov 17, 2025
img
আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে : ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি Nov 17, 2025
img
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবে না শেখ হাসিনা Nov 17, 2025
img
তাইওয়ান নিয়ে তীব্র কূটনৈতিক টানাপোড়েন চীন ও জাপানের, চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাল জাপান Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনাকে ফাঁসি দিলে কাউকে ছাড় নয়, ভারতীয় নম্বর থেকে হুমকি Nov 17, 2025
img
যত চ্যালেঞ্জই আসুক, কমিশন মোকাবিলা করতে প্রস্তুত Nov 17, 2025
img
পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার প্রস্তুত: পরিবেশ উপদেষ্টা Nov 17, 2025
img
শেখ হাসিনার রায় ঘিরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে কঠোর নিরাপত্তা Nov 17, 2025
img
অফিসিয়াল বিবৃতি দিলেন মেহজাবীন চৌধুরী Nov 17, 2025