ইরানের হুমকিতে অনিশ্চিত ট্রাম্পের করিডোর পরিকল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আজারবাইজান-আর্মেনিয়া শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত ককেশাস করিডোর বাস্তবায়ন ঠেকানোর হুমকি দিয়েছে ইরান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা আলি আকবর ভেলায়াতি সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই করিডোর ট্রাম্পের করিযোর হবে না; বরং তার ভাড়াটে সৈন্যদের জন্য কবরস্থানে পরিণত হবে।’

প্রস্তাবিত ‘ট্রাম্প রুট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড প্রসপারিটি’ (ট্রিপ) আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে যাবে, যা আজারবাইজানকে তার নাখিচেভান এক্সক্লেভ এবং পরে তুরস্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে। করিডোরের উন্নয়নাধিকার যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকবে, যা জ্বালানি ও অন্যান্য সম্পদ রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ দেবে।

ইরান যদিও এই চুক্তিকে আঞ্চলিক শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে স্বাগত জানিয়েছে, তবে সীমান্তবর্তী এলাকায় যে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলে সতর্ক করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পর ইরানের সামরিক ক্ষমতা করিডোর ঠেকানোর মতো শক্তিশালী নাও হতে পারে।

এদিকে, আর্মেনিয়ার ঐতিহ্যগত মিত্র রাশিয়া বলেছে, সমাধান আঞ্চলিক দেশগুলো মিলে বাস্তবায়ন করা উচিত, যাতে পশ্চিমাদের মধ্যপ্রাচ্যের মতো ব্যর্থ প্রচেষ্টার পুনরাবৃত্তি না হয়। আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে।

আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে তিন দশকের সংঘাত ২০২৩ সালে নাগোর্নো-কারাবাখ পুরোপুরি আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে গেলে নতুন মোড় নেয়। আজারবাইজান বলেছে, শান্তিচুক্তি সইয়ের পথে একমাত্র বাধা আর্মেনিয়ার সংবিধান থেকে নাগোর্নো-কারাবাখের ভূখণ্ড দাবি অপসারণ করা। প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান এ বিষয়ে গণভোটের ডাক দিয়েছেন, যদিও তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, করিডোর নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি—যেমন কাস্টমস চেক, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আর্মেনিয়ার বিপরীতে আজারবাইজানি ভূখণ্ডে প্রবেশাধিকারের বিষয়। এসব স্পষ্ট না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় বাধা তৈরি হতে পারে।

সূত্র : রয়টার্স, জিও নিউজ

এমকে/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চাকরি হারালেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা আশরাফ মাহদী Oct 22, 2025
img
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনোভাবেই নিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে পারেনি: রাশেদ খাঁন Oct 22, 2025
img

এনসিপি-জামায়াতকে প্রধান উপদেষ্টা

নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করব Oct 22, 2025
img
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে: নাহিদ ইসলাম Oct 22, 2025
img
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের মূল্যহ্রাস, দেশের বাজারেও কমলো দাম Oct 22, 2025
img
ইসলামী আন্দোলন ক্ষমতায় নয়, জনগণের সেবায় বিশ্বাসী: ফয়জুল করীম Oct 22, 2025
img
দেশে রিজার্ভ বেড়ে ৩২ বিলিয়ন ডলার Oct 22, 2025
img
আফগানিস্তানকে ইনিংস ব্যবধানে হারাল জিম্বাবুয়ে Oct 22, 2025
img
কানাডায় ফের ভারতীয় গ্যাংয়ের তাণ্ডব, এবার তাদের নিশানায় পাঞ্জাবি গায়ক Oct 22, 2025
img
জামায়াত প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আইআরআই প্রতিনিধি দলের বৈঠক Oct 22, 2025
img
শাপলা প্রতীক না দেওয়ার আইনি ব্যাখ্যা দিলে অন্য প্রতীক বিবেচনা করা হবে : নাহিদ Oct 22, 2025
img
শ্রমিকদের স্বার্থে আইএলওর ৩ কনভেনশনে সই করল সরকার Oct 22, 2025
img
আগামী মাসে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদির ক্রাউন প্রিন্স Oct 22, 2025
img
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চার থানার ওসি পরিবর্তন Oct 22, 2025
img
এই মুহূর্তে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন প্রয়োজন : নাহিদ ইসলাম Oct 22, 2025
img
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রিজনভ্যান মোটেও বড় কোনো ইস্যু নয় : জাহেদ উর রহমান Oct 22, 2025
img
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোটের দাবি জামায়াতের Oct 22, 2025
img
বৃহস্পতিবার আসছে নতুন ব্যান্ড লেজি ডাইনোসের গান 'রাত' Oct 22, 2025
img
এবার মেসির রেকর্ডের দ্বারপ্রান্তে হলান্ড Oct 22, 2025
img
আবারও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের পরিবর্তন Oct 22, 2025