জাবির সেই চাঁদার টাকা হয় হরিলুট, অন্তরের খোলা চিঠি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে শাখা ছাত্রলীগকে দেওয়া টাকার ভাগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ৩৮ থেকে ৪৫ ব্যাচের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর এক খোলা চিঠিতে এমনটি দাবি করেছেন। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে লেখা ওই খোলাচিঠিটি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এর আগে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে দায় নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রিজওয়ানুল হক চৌধুরি শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানীর পদত্যাগের পর রোববার রব্বানী ও শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের মধ্যকার অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। অডিওর অপর প্রান্তে সাদ্দামের পাশাপাশি অন্তরের উপস্থিতিও ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আর এই ফোন কল রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অন্তরকে হুমকি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে তিনি চিঠিটি প্রকাশ করেছেন। অন্তরের সঙ্গে প্রক্টরের ফোনালাপটিও এরই মধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

খোলা চিঠিটিতে অন্তর লিখেছেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সংকট সম্পর্কে জানার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ভাই হঠাৎ আমাকে ফোন দেন। এক পর্যায়ে ক্যাম্পাস ও শাখা ছাত্রলীগের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে, আমি উক্ত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শাখা ছাত্রলীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেই।

তিনি লিখেছেন, উক্ত ফোন কলের অডিও রেকর্ড রোববার ভাইরাল হলে সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান স্যার আমাকে ফোন দিয়ে ওই ভাইরাল অডিও নিয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে জানতে চান আমি কেন অডিও ভাইরাল করেছি, এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মান-সম্মান নষ্ট করছে দাবি করেন।কাজটি ঠিক হয়নি ও আমাকে দুর্নীতির প্রমাণ দেখাতে হুমকি প্রদান করলে আমি বলি, এটি জাহাঙ্গীরনগর ও দেশব্যাপী ওপেন সিক্রেট এবং আমাকেও টাকার ভাগ দেবার চেষ্টা করলে আমি প্রত্যাখ্যান করি। জাবির ৩৮ থেকে ৪৫ ব্যাচের জুনিয়রেরাও টাকার ভাগ পেয়েছে। উপরোক্ত তথ্য বলার পরে উনি আমতা-আমতা করে বিষয়টি স্বীকার করলেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন।

এদিকে হামজা রহমান অন্তরের সঙ্গে প্রক্টরের ফোনালাপটিও ইতোমধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিওতে অন্তরের উদ্দেশ্যে প্রক্টরকে বলতে শোনা যায়, ফোনটা যেহেতু তোমার, তোমাকেই কিন্তু দায়টা নিতে হবে। তোমার ফোনে কথপোকথন তুমি কিন্তু দায়টা এড়াতে পার না।

কথপোকথনের এক পর্যায়ে হামজা রহমান অন্তরকে বলতে শোনা যায়, ক্যাম্পাসের ৪৪-৪৫ ব্যাচ পর্যন্ত টাকা পাইছে, আমি এটা গোপন রাখার কী আছে স্যার?....স্যার আপনি যদি চান, আমি আপনাকে প্রমাণ দেখাতে পারবো, ৪৪-৪৫ ব্যাচও টাকা পাইছে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, অন্তরের সঙ্গে আমার ইনফরমাল সম্পর্ক। ও আমার অনেক কাছের স্টুডেন্ট। সেই হিসেবে তার সঙ্গে অনেক কথায় হয়। তবে তাকে কোনো হুমকি দেয়া হয়নি।

 

 টাইমস/এমএস 

Share this news on: