যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির সড়কে ন্যাশনাল গার্ডের ৮০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন।
গত সোমবার (১১ আগস্ট) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক ঘোষণায় জানান, তিনি অস্থায়ীভাবে ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে শহরটিতে ৮০০ জন ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন।
ট্রাম্প বলেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির প্রবণতা থেকে ওয়াশিংটন ডিসিকে রক্ষা করতে এ পদক্ষেপ জরুরি ছিল। যদিও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বলছে, ২০২৩ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে সহিংস অপরাধের ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও তার পর থেকে তা দ্রুত কমছে।
তবে তার এই উদ্যোগকে ভালো চোখে দেখেননি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মেয়র মুরিয়েল বাউসার। 'অপরাধ মাত্রা ছাড়িয়েছে', ট্রাম্পের এই দাবি অস্বীকার করেন তিনি। ট্রাম্পের উদ্যোগকে 'আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার' প্রচেষ্টা বলে আখ্যা দেন মুরিয়েল।
এরপরই ওয়াশিংটনে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের আনাগোনা দেখা যায়। বৃহস্পতিবার পেন্টাগনের প্রেস সচিব কিংসলে উইলসন সাংবাদিকদের বলেন, ‘জয়েন্ট টাস্ক ফোর্স ডিজির অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত আর্মি ন্যাশনাল গার্ড ও এয়ার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মিলিয়ে ৮০০ জন মোতায়েন করা হয়েছে। তারা রাজধানীতে কাজ শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা ডিসি মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে স্মৃতিস্তম্ভের নিরাপত্তা, কমিউনিটি সুরক্ষা টহল, সরকারি স্থাপনা ও অফিসারদের সুরক্ষা এবং ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ পোস্টগুলোতে সহায়তা করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্ধারিত জেলায় আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত সেনারা সেখানে থাকবে।’ মার্কিন সেনাবাহিনী বলেছে, ন্যাশনাল গার্ডের প্রাথমিক লক্ষ্য হলো ‘রাজধানীর প্রধান প্রধান এলাকাগুলোতে দৃশ্যমান উপস্থিতি নিশ্চিত করা, যা দৃশ্যমান অপরাধ প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে’।
ন্যাশনাল গার্ড মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর রিজার্ভ অংশ, যা একই সাথে রাজ্য এবং ফেডারেল তথা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করে। এটি সাধারণত অভ্যন্তরীণ দুর্যোগ বা জরুরি অবস্থার সময় মোতায়েন করা হয়, তবে আন্তর্জাতিকভাবে সামরিক অভিযানেও সহায়তা করতে পারে।
মার্কিন ন্যাশনাল গার্ডের দুটি শাখা রয়েছে- আর্মি ন্যাশনাল গার্ড এবং এয়ার ন্যাশনাল গার্ড। কোনো অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও প্রেসিডেন্ট- দুজনের অধীনেই কাজ করে এই বাহিনী।
মূলত ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা মার্কিন সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর রিজার্ভ (সংরক্ষিত) সেনাদের অংশ। খণ্ডকালীন ভিত্তিতে কাজ করেন তারা। যুদ্ধ বা সহায়তা অভিযানের জন্য তাদের বিদেশে মোতায়েন করা হতে পারে। তবে সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করে ন্যাশনাল গার্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য ও অঞ্চলের (ওয়াশিংটন ডিসিসহ) নিজস্ব ন্যাশনাল গার্ড বাহিনী রয়েছে। যেকোন সময় যেকোন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর বা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিতে পারেন। এই বৈশিষ্ট্যটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্যান্য শাখা থেকে ন্যাশনাল গার্ডকে আলাদা করে তুলেছে।
কেএন/এসএন