পাকিস্তানে বন্যায় দুই দিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫১

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ৩৫০ ছাড়িয়ে গেছে। শুধু খাইবার পাখতুনখোয়ায় মারা গেছেন অন্তত ৩২৮ জন।

সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যায় এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, ভয়াবহ বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে বুনের, সোয়াত, মানসেহরা, বাজাউর এবং বাটাগ্রামে ঘরবাড়ি, দোকানপাট এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, খাইবার পাখতুনখোয়া ছাড়াও গিলগিট বালতিস্তানে ১২ জন এবং আজাদ কাশ্মীরে ১১ জন মারা গেছেন।

প্রাদেশিক উদ্ধার সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, প্রায় ২ হাজার উদ্ধারকর্মী ধ্বংসস্তূপ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার এবং নয়টি ক্ষতিগ্রস্ত জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োজিত রয়েছেন।

খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বুনের জেলার বেশন্ত্রি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে দাফন-জানাজার জন্যও গ্রামে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পাশের গ্রামের মানুষ এসে সহায়তা করেছেন। তারা জানান, প্রায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে হতাহতের খবর।

প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হয়েছে বুনের, সোয়াত, বাজাউর, তোরঘর, মানসেহরা, শাংলা ও বটগ্রাম।

উদ্ধারকারী সংস্থার মতে, শুধু বুনের জেলার বেশন্ত্রি গ্রামেই হাজারো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি নেই, আশ্রয় নেই, ভেঙে গেছে সড়কগুলোও। উদ্ধারকর্মীরা রাতের আঁধার ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার কারণে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালগুলোতে মৃতদেহ ও আহতদের ভিড়ে চরম সংকট দেখা দিয়েছে।

প্রাদেশিক সরকার এরমধ্যেই জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম চালু করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০ কোটি রুপি। শুধু বুনের জেলাতেই ১৫ কোটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। হেলিকপ্টারে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হচ্ছে দুর্গম এলাকায়। তবে স্থানীয়দের মতে, ক্ষয়ক্ষতির তুলনায় সরকারি সহায়তা এখনও অপর্যাপ্ত।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফি দিতে না পেরে, ভারতে মেঝেতে বসেই পরীক্ষা দিতে হলো ১ শিক্ষার্থীকে! Oct 10, 2025
img
গাজা যুদ্ধবিরতির জন্য আপনার নোবেল পুরস্কার প্রাপ্য, ফোন কলে ট্রাম্পকে সিসি Oct 10, 2025
img
গাজার সত্য প্রকাশের জন্য আমরা সাংবাদিকদের কাছে ঋণী: পোপ লিও Oct 10, 2025
img
এক চার্জেই মোবাইল ফোন চলবে টানা ৮০ বছর! Oct 10, 2025
img
রাজধানী থেকে বগুড়ার আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার Oct 10, 2025
img
যুদ্ধবিরতিতে সহায়তা পাঠাতে প্রস্তুত জাতিসংঘ: গুতেরেস Oct 10, 2025
img
বিচ্ছেদের পর হাঁটুর বয়সী মডেলের সঙ্গে হার্দিকের প্রেমের গোপন মুহূর্ত ফাঁস Oct 10, 2025
img
অবসরের আগে রোহিত-গম্ভীরের কথা শোনেননি অশ্বিন Oct 10, 2025
img
জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সর্বোচ্চ বেতন পান আনচেলত্তি, স্কালোনি ১০ নম্বরে Oct 10, 2025
img
সমালোচনার ঝড়ে ক্যাবরেরা, সংযত অবস্থানে বাফুফে সভাপতি Oct 10, 2025
img
ন্যায়বিচারের পথে এক ধাপ এগোল বাংলাদেশ : এইচআরডব্লিউ Oct 10, 2025
img
গ্রেপ্তার কুমিল্লার আ.লীগ নেতা তাজুল ইসলাম তাজ Oct 10, 2025
img
আমি আটটি যুদ্ধ থামিয়েছি, ওবামা নোবেল পেয়েছেন কিছু না করেই: ট্রাম্প Oct 10, 2025
img
বিশ্ব ডিম দিবস আজ Oct 10, 2025
img
আফ্রিদিকে দলে নিয়ে কোচ বললেন, ‘বয়স কোনো বিষয় না’ Oct 10, 2025
img
না ফেরার দেশে সাবেক নৌবাহিনী প্রধান সরওয়ার জাহান Oct 10, 2025
img
২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধবিরতি হচ্ছে গাজায় Oct 10, 2025
img
সিনেমা ছেড়ে সন্ন্যাসে, ধর্মপরায়ণ হল ঐশ্বরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী Oct 10, 2025
img
বর্তমান সময়ের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় দেশকে প্রস্তুত থাকতে হবে : জাহেদ উর রহমান Oct 10, 2025
img
সড়কে মাছ ছেড়ে প্রতিবাদ করলেন হাসনাত আবদুল্লাহ Oct 10, 2025