ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ৬২ হাজার ১০০ জনে পৌঁছে গেছে।
এছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে একদিনে আরও ৩১ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে অনাহার ও অপুষ্টিতে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ জনের।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৬২ হাজার ৬৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের দৈনিক আপডেটে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬০ জন নিহত ও ৩৪৩ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৩ জনে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গত এক দিনে অনাহার ও অপুষ্টিতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৬৬ জনে, যাদের মধ্যে ১১২ জন শিশু।
এদিকে গাজায় উদ্ধার কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে বা রাস্তায় পড়ে থাকলেও টানা ইসরায়েলি হামলা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি ভঙ্গ করে ইসরায়েল নতুন করে হামলা শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৫১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৪ হাজার ৫৩২ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে ইসরায়েলি বাহিনী এখনো মানবিক সহায়তা নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ধরনের হামলায় ৩১ জন নিহত এবং ১৯৭ জন আহত হয়েছেন। গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত খাদ্য ও সহায়তা সরঞ্জাম সংগ্রহের চেষ্টা করার সময় ইসরায়েলি হামলায় ১ হাজার ৯৯৬ জন নিহত ও ১৪ হাজার ৮৯৮ জন আহত হয়েছেন।
চলতি বছরের মার্চের শুরুর দিক থেকে চলমান অবরোধ গাজার ২৪ লাখ বাসিন্দাকে চরম দুর্দশায় ঠেলে দিয়েছে। এর ফলে ব্যাপক অনাহার, রোগের বিস্তার ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ধ্বংসের মধ্যে তারা জীবনযাপন করছেন।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এছাড়া, গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার মামলা চলছে।
এমআর/এসএম