কলম্বিয়ায় পুলিশের হেলিকপ্টারে হামলা ও বিমানঘাঁটির কাছে বিস্ফোরণে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। এই দুই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৫৮ জন।
বৃহস্পতিবার সংঘটিত এ ঘটনাকে কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছে। তবে ঘটনাগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, অ্যান্টিওকিয়া প্রদেশে মাদকদ্রব্য ধ্বংসের কাজে সহায়তা করছিল জাতীয় পুলিশের একটি হেলিকপ্টার। সেসময় ড্রোন হামলার শিকার হয় এটি।
প্রদেশের গভর্নর আন্দ্রেস জুলিয়ান রেন্ডন জানান, এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যাচ্ছে হেলিকপ্টারটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হচ্ছে।
কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেদ্রো আর্নুলফো সানচেজ জানিয়েছেন, হামলাটি করেছে সাবেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্ক (এফএআরসি) থেকে বেরিয়ে আসা ‘ইসটাডো মেয়র সেন্ট্রাল (ইএমসি)’–এর ৩৬তম ফ্রন্ট।
প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো জানান, এই ঘটনায় অন্তত আটজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন। প্রথমে তিনি ধারণা করেছিলেন যে শক্তিশালী অপরাধী সংগঠন ‘গালফ ক্ল্যান’ হয়তো জড়িত থাকতে পারে। কারণ সম্প্রতি উরাবা অঞ্চলে ১.৫ টন কোকেন জব্দ করা হয়েছে।
তবে পরে তিনি দায় চাপান ফার্ক বিদ্রোহীদের এই অংশের ওপর।
জাতীয় পুলিশের পরিচালক কার্লোস ফের্নান্দো ত্রিয়ানা বেলত্রান ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়েছেন। হামলায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একই দিনে কালি শহরের মার্কো ফিদেল সুয়ারেজ সামরিক বিমানঘাঁটির কাছে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্যমতে, সেখানে অন্তত ছয়জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন।
কলম্বিয়ার বিমান বাহিনী একে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করেছে এবং জানিয়েছে, হামলাটি গাড়িবোমার মাধ্যমে চালানো হয়েছে।
কালি শহরের মেয়র অফিস জানিয়েছে, শহরের প্রবেশ ও প্রস্থান পথগুলোতে এখন কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মেয়র আলেহান্দ্রো এদার জানিয়েছেন, জরুরি সেবা কর্মীরা আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। হামলার সঙ্গে জড়িতদের তথ্য দিলে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন পেসো (প্রায় এক লাখ মার্কিন ডলার) পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত এই বিস্ফোরণের দায় কেউ স্বীকার করেনি।
এর আগে, চলতি বছরের জুনে কালি ও কউকা অঞ্চলের বিভিন্ন শহরে একাধিক হামলায় অন্তত সাতজন নিহত ও ২৮ জন আহত হয়েছিলেন। সে সময় প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছিল, ২০২২ সালে স্থানীয় এক ফার্ক বিদ্রোহী নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে এসব হামলা চালানো হয়েছিল।
পিএ/এসএন