পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তুত জেলেনস্কি

ইউক্রেনের বিবাদপূর্ণ অঞ্চলগুলো নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই কিসলিৎসা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

কিসলিৎসা বলেন, “প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইতোমধ্যে পরিষ্কার করেছেন যে, তিনি ইউক্রেনের বিবাদপূর্ণ অঞ্চলগুলো নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করতে এবং বৈঠক করতে প্রস্তুত।” তিনি আরও জানান, জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছেন। কিসলিৎসা বলেন, “আমরা রাশিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি করতে চাই। চুক্তির খসড়া প্রস্তুতের কাজ চলছে এবং ইউক্রেনের রাজনীতিবিদরা রাতদিন কাজ করছেন।”



১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার কয়েক বছর পর থেকেই ক্রিমিয়া উপদ্বীপ নিয়ে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রায় দুই দশক চলার পর ২০১৪ সালে রুশভাষী গোষ্ঠীর সহায়তায় ক্রিমিয়া দখল করে রাশিয়া এবং গণভোটের আয়োজন করে। ওই গণভোটে ক্রিমিয়ার অধিকাংশ মানুষ রাশিয়ার পক্ষে ভোট দেন।

২০১৫ সালে বেলারুশের রাজধানী মিনস্কে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ইউক্রেন ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে ইউক্রেন এই প্রতিশ্রুতি পালন করেনি এবং ২০১৭ সালে ন্যাটো সদস্যপদের জন্য আবেদন করে। এ নিয়ে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তেজনা চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরু করে।

সামরিক অভিযানের প্রথম সাত মাসে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিজ্জিয়ার অধিকাংশ অঞ্চল রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং এগুলো রাশিয়ার মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।

২০২৪ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর পরিস্থিতি বদল আসে। ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনকে ‘মুক্ত হাতে সহায়তা’ প্রদান সীমিত করে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দ্রুত সমাধান চায়। তিনি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, যদি প্রয়োজন হয়, ইউক্রেনকে তার ভূখণ্ডের ‘কিছু অংশ’ রাশিয়ার কাছে দিতে হতে পারে।

এর মধ্যে ১৫ আগস্ট পুতিনের সঙ্গে আলাস্কায় এবং ১৮ আগস্ট জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই চাপই জেলেনস্কিকে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অনুপ্রাণিত করেছে।

সূত্র : আরটি
এসএস/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ফ্রান্সের কাছে ৩-২ গোলে হেরে 'পুল পর্ব' থেকেই বিদায় বাংলাদেশের Dec 03, 2025
img
ভেনিজুয়েলায় সামরিক শক্তি ব্যবহার না করতে ট্রাম্পকে আহ্বান পোপ লিওর Dec 03, 2025
img
নাটোরে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল সেনা সদস্যের Dec 03, 2025
img
মার্কিন ডলারের বিপরীতে ফের সর্বকালের সর্বনিম্নে ভারতীয় রুপির মান Dec 03, 2025
img
আরও ৮ জন ইমিগ্রেশন বিচারককে বরখাস্ত করেছে ট্রাম্প Dec 03, 2025
img
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার ফোন, অবশেষে সেই ৮ কুকুরছানা হত্যাকারীর বিরুদ্ধে মামলা Dec 03, 2025
img
মক্কা ও মদিনায় হোটেল ভাড়া বৃদ্ধি ৪০ শতাংশ, বিপাকে ওমরাহযাত্রীরা Dec 03, 2025
img
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর হানাদার মুক্ত দিবস আজ Dec 03, 2025
img
একসময় খালেদা জিয়াকে বিদেশে চলে যেতে বলা হয়েছিল কিন্তু তিনি যাননি : সরওয়ার আলমগীর Dec 03, 2025
img
মাগুরায় বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শামিম গ্রেপ্তার Dec 03, 2025
img
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রাণ গেল অসুস্থ কয়েদির Dec 03, 2025
img
রংপুরে জামায়াতসহ ৮ দলের সমাবেশ আজ Dec 03, 2025
img
জামায়াত প্রার্থীর বাসায় গেলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ Dec 03, 2025
img
‘আমি জাদুকর নই’, আজারবাইজানের বিপক্ষে হারের পর বাটলার Dec 03, 2025
img
ছোট উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করার লক্ষ্যে শীঘ্রই বাংলাদেশে আসছে পে-পাল : গভর্নর Dec 03, 2025
img
দেশের ওষুধ শিল্পকে বৈশ্বিক মানে এগিয়ে নিতে হবে : ডা. শফিকুর রহমান Dec 03, 2025
img
টিউলিপের বিচার ও দণ্ড প্রশ্নে দুদকের ব্যাখ্যা Dec 03, 2025
img
ভারতের চোখে চোখ রেখে কথা বলা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া: রাশেদ খান Dec 03, 2025
img
দক্ষতা উন্নয়ন ও কারিগরি শিক্ষা অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি: শিক্ষা উপদেষ্টা Dec 03, 2025
img
সুনামগঞ্জে ৪৭ হাজার ২৪২ ঘনফুট অবৈধ পাথর জব্দ Dec 03, 2025