জান্তা-বিদ্রোহী সংঘর্ষে গুঁড়িয়ে গেল ১২৪ বছরের পুরোনো গোকটেইক সেতু

বোমা হামলা চালিয়ে মিয়ানমারের একটি ঐতিহাসিক রেলসেতু গুঁড়িয়ে দিয়েছে দেশটির সামরিক জান্তাবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। ঔপনিবেশিক আমলের বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলওয়ে সেতু হিসেবে পরিচিত ওই সেতু বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বিদ্রোহীরা উড়িয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে জান্তা।

রোববার মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধী সশস্ত্র একাধিক গোষ্ঠী বোমা হামলা চালিয়ে ঔপনিবেশিক আমলের একটি রেলসেতু ধ্বংস করেছে।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার গৃহযুদ্ধের কবলে রয়েছে। তখন থেকেই দেশটির জাতিগত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রকামী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জোটের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনী।

জান্তা সরকারের মুখপাত্র জ্য মিন তুন এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, বিদ্রোহী গোষ্ঠী তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যরা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঐতিহাসিক ‘গোকটেইক সেতু’ ধ্বংস করেছে।

ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩৩৪ ফুট উঁচুতে অবস্থিত গোকটেইক রেলওয়ে সেতু মিয়ানমারের সবচেয়ে উঁচু সেতু। ১৯০১ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে চালুর সময় এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু রেলওয়ে ট্রেসেল সেতু।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, দেশটির মান্দালয় থেকে উত্তর শান অঙ্গরাজ্যকে রেলপথে সংযুক্ত করা এই সেতুটি আংশিকভাবে ধসে পড়েছে ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে টিএনএলএর মুখপাত্র লওয়ে ইয়াই উ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, জান্তার বোমা হামলায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

‘‘আজ সকালে মিয়ানমার সেনারা ড্রোন ব্যবহার করে আমাদের ঘাঁটিগুলোতে হামলার চেষ্টা করে। তারা আমাদের বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল। কিন্তু তাদের বোমা গোকটেইক সেতুতেও আঘাত হানে।’’

সম্প্রতি নাওংকিও ও কিয়াউকমি শহরে দেশটির জান্তা সৈন্য ও টিএনএলএর যোদ্ধাদের মাঝে তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে। যদিও গত জুলাইয়ে নাওংকিও শহর পুনর্দখলের দাবি করেছিল জান্তা।

সূত্র: এএফপি।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
গত এশিয়া কাপ থেকে পছন্দ মতো দল পাচ্ছি না : ট্রট Oct 25, 2025
img
রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে, আবার অভিযোগও তোলে: ইয়ামাল Oct 25, 2025
img
ঝালকাঠিতে বাসচাপায় প্রাণ গেল বিএনপি নেতার Oct 25, 2025
img
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ড্রাফট দেখাতে অপারগতা জানিয়েছে কমিশন : এনসিপি Oct 25, 2025
img
ভারত বাংলাদেশের উন্নতি চায় না : নুরুল ইসলাম সাদ্দাম Oct 25, 2025
img
ভক্তদের বড় দুঃসংবাদ দিল আর্জেন্টিনা Oct 25, 2025
img
রাজনৈতিক বিভেদে ফ্যাসিবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটলে ক্ষমা করবে না জাতি : সালাহউদ্দিন Oct 25, 2025
img
এনসিপি চায় প্রত্যেক দল নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করবে: আখতার Oct 25, 2025
img
নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে দল থেকে ছিটকে গেলেন জেমিসন Oct 25, 2025
img
সিনেমার ডাবিং নিয়ে লড়াই, আদালত পেরিয়ে স্টুডিওতে মিঠুন-কুণাল Oct 25, 2025
img
আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় জয়ের সাক্ষাৎকারে নড়েচড়ে বসেছে সরকার: রনি Oct 25, 2025
img
কাবুলের সঙ্গে সীমান্ত ক্রসিং-বাণিজ্য স্থগিতই থাকবে : ইসলামাবাদ Oct 25, 2025
img
পরিবর্তন সবসময়ই সংগঠন ও নেতৃত্বের মাধ্যমেই সম্ভব হয় : মোস্তফা ফিরোজ Oct 25, 2025
img
আগামী নির্বাচনে সরকার গঠন করবে জামায়াত: শাহজাহান চৌধুরী Oct 25, 2025
img
সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল ববি-বাশারের ঘনিষ্ঠ আলাপ Oct 25, 2025
img
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘মাইনাসে পারফর্ম’ করছেন : রুমিন ফারহানা Oct 25, 2025
img
মুসলিমদের নিরাপত্তায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করছে নরওয়ে Oct 25, 2025
img
দায়িত্ব পালনে কোনো দুর্নীতি করিনি, হাজিদের আট কোটি টাকা ফেরত দিয়েছি: ধর্ম উপদেষ্টা Oct 25, 2025
img
স্প্যানিশ চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসোর জন্মদিন আজ Oct 25, 2025
img
এশিয়া সফরে কিম জং উনের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ ট্রাম্পের Oct 25, 2025