পশ্চিম তীরে হাজার হাজার জলপাইগাছ উপড়ে ফেলল ইসরায়েলি সেনারা

রামাল্লার কাছে আল-মুগাইর গ্রামে ইসরায়েলি সেনারা প্রায় তিন হাজার জলপাইগাছ উপড়ে ফেলেছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লার কাছে আল-মুগাইর গ্রামে ইসরায়েলি সেনারা প্রায় তিন হাজার জলপাইগাছ উপড়ে ফেলেছে। গ্রাম পরিষদের উপপ্রধান মারজুক আবু নাইম জানিয়েছেন, শনিবার ভোর থেকে ইসরায়েলি সেনারা প্রায় ০.২৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকার এই গাছগুলো উপড়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে আসে এই তথ্য।

জলপাইগাছ ফিলিস্তিনি সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি ভূমি দখল এবং সেখানকার বাসিন্দাদের জোরপূর্বক উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে এমন কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। ইসরায়েলি সেনারা দাবি করেছে যে, জলপাইগাছগুলো তাদের বসতি এলাকার প্রধান সড়কের জন্য 'নিরাপত্তা হুমকি' তৈরি করছিল। তবে ফিলিস্তিনি গবেষক হামজা জুবেইদাত মনে করেন, এটি ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজস্ব ভূখণ্ড থেকে উৎখাত করার চলমান প্রচেষ্টারই অংশ।

জুবেইদাত আল-জাজিরাকে বলেছেন, "১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েল একই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। পশ্চিম তীরের শহর ও গ্রাম থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করা এর মূল লক্ষ্য। এখন যা ঘটছে, তা এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়ারই ধারাবাহিকতা।"

আল-মুগাইর গ্রামটি কৃষি ও পশুপালনের ওপর নির্ভরশীল এবং রামাল্লার অন্যতম উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত। জুবেইদাতের মতে, তিন হাজার জলপাইগাছ উপড়ে ফেলার ফলে সেখানকার মানুষের খাদ্য ও পানির অনিশ্চয়তা আরও বেড়ে যাবে। গাছ কেটে ফেলা, পানির উৎস দখল এবং কৃষকদের খামারে যেতে বাধা দেওয়ার মতো ইসরায়েলি কর্মকাণ্ড ফিলিস্তিনিদের জীবনধারণকে কঠিন করে তুলেছে।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়বিষয়ক দপ্তর (ওসিএইচএ)-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা ২ হাজার ৩৭০ বারেরও বেশি হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে রামাল্লা অঞ্চলে। একই সময়ে, ইসরায়েলি সেনা ও বসতি স্থাপনকারীদের হাতে কমপক্ষে ৬৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১২৯ জন শিশু।

এদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা এখনো অব্যাহত আছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬২ হাজার ৬০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বেঁচে থাকার সাংবিধানিক অধিকার চাই, বক্তব্য ভুল হলে ক্ষমা চাইব: ফজলুর Aug 25, 2025
img
রিজওয়ান ও মাসুদকে অধিনায়ক রাখা-না রাখার সিদ্ধান্তে পিসিবির মন্তব্য! Aug 25, 2025
দীপাবলিতে ২৫০ কোটি টাকার প্রাসাদে উঠছেন আম্বির-আলিয়া! Aug 25, 2025
img
ভুয়া মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তৌহিদ আফ্রিদিকে: রাশেদ খাঁন Aug 25, 2025
img
বিশালের ৩৫তম ছবি ‘মাকুটাম’ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা Aug 25, 2025
প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে ৫ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিএনসিসির চুক্তি Aug 25, 2025
img
তৌহিদ আফ্রিদির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর Aug 25, 2025
img
ফজলুর রহমানের বাসার সামনে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ, সেনা-পুলিশ মোতায়েন Aug 25, 2025
img
বিদেশ থেকে ২ ইউটিউবার আমাকে হত্যা করতে বলছে: ফজলুর রহমান Aug 25, 2025
৭ সমুদ্র ১৩ নদীর ওপার থেকেও তারেক রহমান আমাদের এক রেখেছেন! Aug 25, 2025
img
টিসিবিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলনামূলক কম: বাণিজ্য সচিব Aug 25, 2025
img
হলুদ শাড়িতে নজর কাড়লেন কুসুম শিকদার Aug 25, 2025
বেতনে বড় ছাড় দিচ্ছেন সালমান খান! Aug 25, 2025
তামিম একজন ভালো খেলোয়াড়, যদি সে দলে আসে, তাহলে ক্রিকেটের জন্য ভালো হবে; বাবু Aug 25, 2025
'যে ছাত্রদল ডাকসু চায়নি, তারাই এখন শিক্ষার্থীদের ইশতেহার দেয়' Aug 25, 2025
নজরদারির অপব্যবহার রুখতে সরকারের বিশেষ কমিটি Aug 25, 2025
"আদালত প্রাঙ্গণে জজের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ল বাদীপক্ষ" Aug 25, 2025
রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আব্দুল্লাহপুরে মানববন্ধন Aug 25, 2025
img
দল আমার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেবে তা মাথা পেতে নেব : ফজলুর রহমান Aug 25, 2025
img
ডিবি আমাকে হুদাই ৩২ টা দিন ভিতরে রাখে নাই, আজকে বাপ পোলা একসাথে ভিতরে Aug 25, 2025