২৩-২৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সভাপতি শেখ সালমান। তার উপস্থিতিতে ২৪ কিংবা ২৫ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজন করতে চায়। আজ প্রতিযোগিতার লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে এমনটাই জানিয়েছেন বাফুফের অন্যতম সহ-সভাপতি ও জেলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপী।
বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপী বলেন, '৩০ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ফাইনাল ২৪ কিংবা ২৫ নভেম্বর আমরা এএফসি সভাপতির উপস্থিতিতে জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল করব। জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের মাঝামাঝি সময়ে অ-১৭ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপও শুরু হবে।’
৩০ আগস্ট মুন্সিগঞ্জ স্টেডিয়ামে মুন্সিগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার মধ্যকার উদ্বোধনী ম্যাচে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন। চলমান বর্ষা মৌসুমে অনেক জেলা স্টেডিয়ামের মাঠ অনুপোযুক্ত থাকায় মূলত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে খেলা পুরোদমে শুরু হবে।
২০০৮ সাল থেকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে বেরিয়ে জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সৃষ্টি হয়েছে। আলাদা সংগঠন হলেও ডিএফএ’র নিজস্ব কোনো মাঠ নেই। ফলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার উপরই নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় খেলা আয়োজনে। এজন্য জেলা ফুটবল লিগও হয়না অনেক জেলায়। লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুব-উল-আলম এই প্রসঙ্গে বলেন, 'এই সমস্যার বিষয়ে আমরা অবহিত। এই টুর্নামেন্ট উপলক্ষ্যে আমি জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রত্যেক ডিসির সঙ্গে আলোচনা করেছি। প্রতি জেলা প্রশাসন এই খেলা আয়োজনে অত্যন্ত আন্তরিক থাকবে। এতে কোাে সমস্যা হবে না। এছাড়াও খেলার প্রয়োজনে মাঠ বরাদ্দ দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশনাও রয়েছে।'
তিন বছর পর জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৬৪ জেলাই এতে অংশগ্রহণ করছে। অনেক জেলায় দীর্ঘদিন জেলা লিগ নেই। জেলায় ফুটবল না থাকায় জেলা দল গঠন বেশ কঠিনই। এ নিয়ে বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপী বলেন, '১০-১৫ বছর কি হয়েছে, কি হয়নি সেই আলোচনায় আমরা যাব না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ হচ্ছে। বাফুফের নতুন কমিটিও নতুন উদ্যোমে কাজ করছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আমাদের সহায়তা করছে। সেই আলোকেই এই টুর্নামেন্টের আয়োজন। আমরা আশা করি এখান থেকে খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে। পাশাপাশি জেলাগুলোর লিগ নিয়েও আমাদের সদস্য ইকবাল হোসেন কাজ করছে।'
৬৪ জেলা ভৌগলিকভাবে ৮ জোনে ভাগ করেছে বাফুফে। ৮ জোনের মধ্যে বাংলা বর্ণমালা অনুযায়ী ১-৮ সিরিয়াল করা হয়েছে। সেই সিরিয়ালের মাধ্যমে প্রতিপক্ষ নির্ধারণ হয়ে একটি দল হোম-অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে দু’টি ম্যাচ খেলবে। প্রথম পর্বের জয়ী ৩২ দল আবার হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে খেলবে। সেখান থেকে বিজয়ী ১৬ দলকে নিয়ে হবে নকআউট পর্ব। সব মিলিয়ে ১১২ টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ, অ-১৭ ও নারী বয়স ভিত্তিক টুর্নামেন্টের জন্য বাফুফেকে ১০ কোটি টাকা প্রদান করবে সরকার। তারুণ্যের উৎসবের আওতায় বাফুফে সরকারের কাছ থেকে এই আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে। অন্য ফেডারেশনগুলোও তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষ্যে অনেক টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। তাদেরকেও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আর্থিক সহায়তা করলেও অর্ধেক টাকাই দিচ্ছে বাফুফেকে, 'তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষ্যে ২০ কোটি টাকার মধ্যে আমরা ফুটবলকে ১০ কোটি টাকা দিচ্ছি। বাকি অর্থ অন্য ফেডারেশনগুলোর প্রয়োজন ও চাহিদা অনুসারে প্রদান করা হবে।'
ফুটবল বেশ জনপ্রিয় খেলা। সেটা ঝিমিয়ে পড়ায় ক্রীড়া উপদেষ্টা তৃণমূল পর্যায়ে বাফুফেকে বড় অঙ্কের বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে বাফুফে বড় আর্থিক সহায়তা পেলেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্দেশনা অনুসরণে তাদের যেন গড়িমসি। সিঙ্গাপুর-ভুটান ম্যাচের টিকিট বিক্রির আয় থেকে ১৫, টিভি রাইটস থেকে ১০ শতাংশ অর্থ জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চাইলেও এখনো দেয়নি বাফুফে।
বিগত সরকারও ফুটবল উন্নয়নের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল বাফুফেকে। সেই টাকার সঠিক হিসাব প্রদান করতে পারেনি ফেডারেশনের তৎকালীন কমিটি। তবে বর্তমান কমিটি সরকারের হিসাবের সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার জন্য আলাদা ব্যাংক হিসাবই খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সর্বশেষ নির্বাহী কমিটির সভায়।
এমকে/এসএন