সুস্থ দেহ, সুস্থ মন। শরীর ও মনকে সুস্থ রাখতে শরীর চর্চা ও খেলাধুলার বিকল্প নেই। রাজধানী ঢাকায় খেলাধুলার জন্য মাঠ দিনকে দিন কমছে। আজ জাতীয় নারী হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে প্রধান অতিথি হিসেবে এসে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, রাজধানীতে মাঠ সংকট নিয়ে আক্ষেপ করেছেন।
ঢাকা শহরের মাঠ ও খেলার পরিবেশ নিয়ে উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, 'ঢাকা শহরে খেলার জায়গা নেই। ভুল না করলে ১৯টি মাঠ আছে। এখানে ১ কোটি ৬০ লাখের মানুষের বিপরীতে এই কয়টা মাঠ দিয়ে আমরা কী করব? এর মধ্যে কিছু মাঠের ব্যবস্থাপনা চলে গেছে কিছু কোম্পানি ও সংস্থার হাতে। এতে এলাকাবাসীর প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে আগেই প্রতিবাদ করেছি। এখনও একই অবস্থান রাখি।'
বাচ্চারা খেলার মাঠে খেলার সুযোগ না পাওয়ায় মোবাইল আসক্তি বেড়েছে। এতে সামাজিক দায়িত্বশীলতা গড়ে উঠছে না বলে মনে করেন তিনি, 'আমাদের ছেলে মেয়েরা বড় হচ্ছে শুধু মাত্র মোবাইল ও গেজেটের মাধ্যেমে।
আগে যখন খেলার মাঠে কেউ যেত তার পাশের পাড়ার মানুষ আসত। ওদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেত। এখন আমার বাচ্চা মেশে আমার অর্থ সামাজিক বাস্তবতার লোকের সঙ্গে, আপনার বাচ্চা আপনার আর্থ সামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জসপূর্ণ এমন লোকের সঙ্গে। যেখানে দায়িত্বশীলতা গড়ে উঠছে না।'
ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে না থাকলেও রিজওয়ানা ক্রীড়ার পরিবেশ নিয়ে আগে থেকেই সোচ্চার ছিলেন। আজ সেটা স্মরণ করে বলেন, 'আমি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে না থাকলেও নিজেকে প্রাসঙ্গিক বলে মনে করি এজন্য যে আমরা যখন প্রাকৃতিক পরিবেশ নিয়ে কথা বলি একই সঙ্গে সামাজিক পরিবেশের গুরুত্বটাও মানুষের সুস্থ ভাবে বেড়ে ওঠার গঠেনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বোঝানোর চেষ্টা করি। নিজে একজন পরিবেশ আইনবিদ হয়ে বিভিন্ন মাঠ যখন দখল হয়ে যাচ্ছিল তখন সেগুলোর বিরুদ্ধে কথা বলেছি । আপনাদের কারও কারও বিরুদ্ধে আমার মামলাও আছে।'
পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনকারী হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে সুপরিচিত রিজওয়ানা। ক্রীড়াঙ্গনেও তার আন্দোলন সম্পর্কে জ্ঞাত। কক্সবাজার রামুতে বাফুফের ট্যাকনিক্যাল সেন্টার বনের পরিবেশের জন্য হুমকি ছিল। তিনি সেটার প্রতিবাদ করেছিলেন। পরবর্তীতে বাফুফের সেন্টার সেখান থেকে বরাদ্দ বাতিলও হয়েছে।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, 'যারা আজকে বিজয়ী হয়েছেন তাদের অভিনন্দন। যারা খেলায় অংশ নিয়েছেন আজ তাদের সমাজে নারীর যে অবস্থান এটা জেনে না জেনেই আপনারা একটা ভূমিকা রাখছেন। আজ এখানে যখন আসি, খেলা দেখতে দেখতে মনে হলো আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর দুটো জায়গায় নারী ফুটবল খেলা বন্ধ করা হয়েছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই দুটো জায়গায় মেয়েদের খেলার আয়োজন করে দিলাম। যার ফলে গ্রামের নারীরা খেলায় অংশ নিতে পারল।'
এমকে/এসএন