অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন কামনা করছি : মহিউদ্দিন রনি

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন রনি অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে বরিশাল নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

মহিউদ্দিন রনি বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অথর্ব, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ওই হ্যাডমটা নাই যে বরিশালের মানুষের কাছে আসা বা বরিশালের মানুষের কথাগুলো শোনার। তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য আশ্বাস দেওয়ার হ্যাডমটা তার নেই। আমরা এটা বুঝে গেছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন অনশনে বসেছিল তখন তারা বলেছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরিশাল না এলে অনশন ভাঙবেন না। কিন্তু সেটা না হয়ে পরিকল্পিত হামলা করে শিক্ষার্থীদের উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাছে আমাদের প্রত্যাশা করার তেমন কিছু নেই। তার থেকে আমাদের জনগণ অনেক বেশি উপযোগী ও পাওয়ারফুল এটা আমরা বিশ্বাস করি। তাই তার মতো এত নগণ্য ব্যক্তিকে কেন গুরুত্ব দিতে যাব।

তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রের কাছে চেয়েছিলাম সমস্যার সমাধান। এখন রাষ্ট্র যেভাবে পারবে সে সমস্যার সমাধান করে দিক। সরকারকে আমরা বলবো অতিদ্রুত জাতীয় নির্বাচন দিয়ে দেন, যারা সামনে দায়িত্ব নিয়ে জনতার কথা বলতে আসবে তারা যেন তাদের নির্বাচনী ইশতিহারে স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের বিষয়টি ও দাবিগুলো রাখে। আমরা এখন অতিদ্রুত নির্বাচন কামনা করছি।

রনি আরও বলেন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বাংলাদেশের সকল সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যখাত সংস্কারের তিন দফা থেকে বর্তমানে চার দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ১ মাস ধরে চলা আন্দোলনে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ বার বার জানান দিচ্ছে যে কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। তারা অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি প্রায় ১ শ অচল মেশিন সচল করেছে, নতুন ১ শ টি সিলিং ফ্যান লাগানো হয়েছে, ৪৬ জন সরকারি ট্রলিম্যান নিয়োগ দিয়েছেন এবং হরিজন সম্প্রদায়ের লোকসহ নতুন কর্মী নিয়োগ দিয়েছেন বলে বলছেন। কিন্তু আমরা চাচ্ছি সাময়িক সমস্যার সমাধান নয়, সমস্যার সমাধান টেকসই হোক। তারা সময় চাচ্ছে, যার আগে আমরা চাচ্ছি বরিশালের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ অর্থাৎ স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে আলোচনা করতে। এজন্য আমরা আগামীকাল দুপুর ১২টায় বরিশালের বিভিন্ন স্তরের নাগরিক প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করবো।

তিনি বলেন, আমরা সবাই শিক্ষার্থী। তাই আমাদের ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে হবে। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে বসতে হবে। আর স্থায়ী সমাধান না হলে তখন সিন্ডিকেট আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সিন্ডিকেট যে আবার বাসা বাঁধবে না, এই সমস্যা আবার হবে না, এটার গ্যারান্টি কে দেবে। এজন্য আমাদের দাবি যে মেনে নেওয়া হয়েছে সে লক্ষ্যে একটা লিখিত আশ্বাস দেওয়া হোক। আমাদের আন্দোলনের এখন একটা মিনিমাম সফলতা এসেছে, এখন এটিকে আমরা টেকসই করতে চাই।

রনি বলেন, আমাদের সুহান একজন জুলাইযোদ্ধা, জুলাই বীর। তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সাংবাদিকদের তোপের মুখে কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়। সুহান কারাগারে বসেও অনশনে ছিল। সুহান যখন মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছিল, তখন তাকে ডেভিল হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। এটা হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী একটি ঘৃণ্যতম অ্যাকশন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই বরিশালে যারা ডেভিল তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে ছবি তুলছে এটাও আমরা দেখছি। বিএনপির অফিসে পোড়ানো মামলায় যারা আসামি তারও আমীর খসরুর সাথে আছে- এটাই দেখছি। সাংবাদিক ভাইয়েরা এটা তদন্ত করে দেখবেন।

ডেভিল আখ্যা দিয়ে জুলাইযোদ্ধাকে কারাগারে পাঠানো মানে এখানকার পুলিশ কমিশনার শেখ হাসিনার পারপাস সার্ভ করছেন। শেখ হাসিনা চেয়েছিল জুলাইযোদ্ধাদের হেনস্তা করে খতম করতে হবে, আর এই পুলিশ কমিশনার সেটাই করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ডাকসুর নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, দেশের একটা বড় সেক্টর স্বাস্থ্যখাত, আর সেই স্বাস্থ্যখাত সংস্কার আন্দোলন সফল না করে কোনোভাবেই ঢাকায় যেতে পারছি না। আমি আশা করি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিষয়টি মার্জনা করবে এবং বিশ্বাস করি তারা বিষয়টি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে। 

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে এখনই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা Aug 26, 2025
img
আজ থেকে শুরু হচ্ছে ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা Aug 26, 2025
img
জিয়াউর রহমানের মাজারে ডাক্তার সাবরিনা, ক্ষোভ প্রকাশ করলেন যুবদল সভাপতি Aug 26, 2025
img
কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল জামায়াত নেতার Aug 26, 2025
img
আগামীতে নেককার মুত্তাকি মানুষের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দিতে হবে : ধর্ম উপদেষ্টা Aug 26, 2025
img
রাজনীতির প্রতিশোধ অনেকটা প্রকৃতির প্রতিশোধের মতোই : জিল্লুর রহমান Aug 26, 2025
img
শিগগিরই রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পরিকল্পনা করছেন গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী Aug 26, 2025
img
প্রাণনাশের শঙ্কায় বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান, চাইলেন নিরাপত্তা Aug 26, 2025
img
৬ মাসের মধ্যে প্রতি জেলায় লিগ্যাল এইডের ব্যবস্থা করে যাব : আসিফ নজরুল Aug 26, 2025
img
গিলকে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে দেখছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার Aug 25, 2025
img
আগামী ২০ বছরেও আওয়ামী লীগ ফিরে আসার কোনো রাজনৈতিক সম্ভাবনা নেই : রনি Aug 25, 2025
img
টাইগারদের সাবেক কোচের জায়গা নিলেন শেন বন্ড Aug 25, 2025
img
পুনে শহরে গ্রেপ্তার ২৩ বাংলাদেশিকে বিমানে নেওয়া হলো পশ্চিমবঙ্গে Aug 25, 2025
মানুষের ভিড়, মোদীর জন্য বড় বার্তা! | থালাপতি বিজয় | মোদী | নির্বাচনী ভিডিয়ো Aug 25, 2025
img
আফ্রিদির বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে ভালো উকিল খুঁজছেন স্বপন Aug 25, 2025
img
গভীর রাতে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে ক্ষমা চাইলেন উমামা ফাতেমা Aug 25, 2025
img
ইসির সীমানা পুনর্নির্ধারণ : দ্বিতীয় দিনে ২০ আসনের ৫১৩ আবেদনের শুনানি Aug 25, 2025
img
খুলনার নতুন ডিসি তৌফিকুর রহমান Aug 25, 2025
img
রোহিঙ্গারা অধিকার নিয়ে মায়ানমারে ফিরতে প্রস্তুত : খলিলুর রহমান Aug 25, 2025
img
হার দিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের যাত্রা শুরু আফিদাদের Aug 25, 2025