৮০ বছর পর আর্জেন্টিনায় মিলল নাৎসিদের লুট করা শিল্পকর্ম

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের হাতে চুরি হওয়া একটি মূল্যবান ইতালীয় চিত্রকর্ম ৮০ বছর পর হঠাৎ আর্জেন্টিনার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে। শিল্পকর্মটি ছিল আমস্টারডামের এক ইহুদি শিল্প ব্যবসায়ী জ্যাক গাউডস্টিকারের সংগ্রহের অংশ। এ খবর বুধবার (২৭ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি প্রকাশ করেছে।

চিত্রকর্মটি হলো জিউসেপ্পে গিসলান্দির আঁকা ‘পোর্ট্রেট অব আ লেডি’। এটি আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসের কাছে একটি বাড়ির বসার ঘরে সোফার উপরে ঝোলানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। বাড়িটি বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় ছবিটি ধরা পড়ে। বাড়ির মালিক ছিলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দক্ষিণ আমেরিকায় পালিয়ে যাওয়া এক জ্যেষ্ঠ নাৎসি কর্মকর্তা।

গাউডস্টিকারের সংগ্রহে যুদ্ধকালে বহু মূল্যবান শিল্পকর্ম ছিল, যা নাৎসিরা জোরপূর্বক কিনে নিত। তার মধ্যে হারম্যান গোরিংও ছিলেন। গাউডস্টিকার নেদারল্যান্ডস থেকে পালানোর সময় সমুদ্রে দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে তার একমাত্র উত্তরাধিকারী, পুত্রবধূ মারেই ভন সাহা ২০০৬ সালে ২০২টি শিল্পকর্ম ফেরত পান। তবে গিসলান্দির এই চিত্রকর্মটি সেই তালিকায় ছিল না।

এডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, চিত্রকর্মটি এসএস অফিসার ও গোরিংয়ের আর্থিক সহকারী ফ্রিডরিখ ক্যাডজিয়েনের কাছে ছিল। ১৯৪৫ সালে তিনি পালিয়ে সুইজারল্যান্ড, পরে ব্রাজিল এবং অবশেষে আর্জেন্টিনায় গিয়ে বসতি স্থাপন করেন। মার্কিন তদন্তকারীরা তাকে “সবচেয়ে নিচু ধরনের সাপ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ক্যাডজিয়েনের মৃত্যু ১৯৭৯ সালে ঘটে, এরপর দীর্ঘদিন ধরে তাঁর দুই কন্যার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সৌভাগ্যক্রমে বাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপনের সময় ছবিটি ধরা পড়ে।

নেদারল্যান্ডসের কালচারাল হেরিটেজ এজেন্সি ছবিটি পর্যালোচনা করে নিশ্চিত করেছে, এটি নকল নয়। এছাড়া আরেকটি চুরি হওয়া শিল্পকর্ম, ডাচ শিল্পী আব্রাহাম মিগনের ফুলের স্থিরচিত্র, ক্যাডজিয়েনের কন্যার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া গেছে।

গাউডস্টিকারের উত্তরাধিকারীদের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা সব লুট করা শিল্পকর্ম ফিরিয়ে আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। ভন সাহা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য জ্যাক গাউডস্টিকারের সংগ্রহ থেকে লুট হওয়া প্রতিটি শিল্পকর্ম ফিরিয়ে আনা।”

তথ্যসূত্র : বিবিসি
এসএস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দাম্পত্য-ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের ৪০ বছর, অনুপমকে কিরণের খোলা চিঠি Aug 27, 2025
img
দাবি-দাওয়া লিখে মন্ত্রণালয়ে জমা দিলে সমাধান হয়ে যাবে : সিনিয়র সচিব Aug 27, 2025
img
সিরিজ খেলতে ঢাকা হয়ে সিলেটে নেদারল্যান্ডস দল Aug 27, 2025
img
২ ব্যাংকের পার্পিচুয়াল বন্ডের জন্য মুনাফা রেট ঘোষণা Aug 27, 2025
img
কেন শাহরুখ-আরিয়ানের কাছে ক্ষমা চাইলেন ফারাহ? Aug 27, 2025
img
গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দিচ্ছে সরকারের ভেতরের মহল : ফখরুল Aug 27, 2025
img
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথমবার ডাক পেল চার নতুন ক্লাব Aug 27, 2025
img
প্রেমের নতুন অধ্যায় নিয়ে আসছে ‘লাভ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি’ Aug 27, 2025
img
শ্বশুরের জায়গায় অন্য লোককে প্রতিষ্ঠা করলে মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখত : দুদু Aug 27, 2025
img
যমুনার পথে অগ্রসর হতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা Aug 27, 2025
img
যমুনার দিকে যাচ্ছেন প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা Aug 27, 2025
img
জুভেন্টাসের ‘ফ্লপ’ হয়েও ব্রাজিলের দলে জায়গা পেলেন জর্জ Aug 27, 2025
img
কবি নজরুল ছিলেন মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত : ডা. ইরান Aug 27, 2025
img
বুয়েট শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো প্রস্তাব আকারে পেশের পরামর্শ দিলেন জনপ্রশাসন সচিব Aug 27, 2025
img
ভিসা-গ্রিনকার্ড নীতিতে বড় পরিবর্তন আনছেন ট্রাম্প Aug 27, 2025
img
সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা বরদাশত করা হবে না: প্রেস সচিব Aug 27, 2025
img
নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে ডাকসু প্রার্থীদের অতিজরুরি নির্দেশনা Aug 27, 2025
img
পেছানো হলো রাকসু নির্বাচনের তারিখ Aug 27, 2025
img
সাবাকে জুহুর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট দিলেন হৃতিক, ভাড়া কত? Aug 27, 2025
img
সিলেটের সাদা পাথর লুটকারীরা এখন সিআইডির নজরদারিতে Aug 27, 2025