জামায়াতে ইসলামী আর এনসিপি নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ।
আজ সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলেক্ষ্যে আয়োজিত র্যালির আগে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
হারুনুর রশিদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য নতুন স্বপ্ন দেখা আমরা শুরু করেছি। বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এই প্রচেষ্টায় আমরা লিপ্ত রয়েছি। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যারা ১৯৭১ সালেও এই দেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেও সেদিন একটি গোষ্ঠী ও একটা দল দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল, এখনো তারা বির্তকিত। বাংলাদেশের মানুষ চায় একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ যাদেরকে পছন্দ করবে তারাই দেশ পরিচালনা করবে এবং তাদের মাধ্যমেই জাতীয় সংসদ গঠিত হবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি নির্বাচনকে ভন্ডুল, বিলম্বিত ও নসাৎ করার জন্য চক্রান্ত চলছে। আজকেও সেই গোষ্ঠী বলছে পিআর পদ্ধতি ছাড়া নাকি নির্বাচন হবে না। পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ অবহিত নয়, তারা পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানে না।
জামায়াত সম্পর্কে তিনি বলেন, এই দলটি সব সময় মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। ১৯৮৬ সালে যখন সকল রাজনৈতিক দল দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছিল, সেই সময় জামায়াত ইসলাম মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছিল যারা নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেইমান। অযথা সকল আন্দোলন সংগ্রামকে পদদলিত করে তারা ৮৬ সালের সাজানো নির্বাচনে গিয়েছিল। ঠিক ৯১ এর নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় আসলো। আবার তিন বছর পর আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলাম মিলে বিএনপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য রাস্তায় আন্দোলন শুরু করলো। সেসময় আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিয়ে ১৭২ দিন হরতাল পালন করেছেল জামায়াতে ইসলামী।
এনসিপির সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যার কোনো প্রয়োজন নেই, অপ্রয়োজনীয় ইস্যু নিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে এনসিপি নামক দলটি। যারা এই সরকারের ছত্রছায়ায় গঠিত হয়েছে। তারা বলেছে, গণপরিষদ গঠন করতে হবে। যার কোনো প্রয়োজন নেই। এর মধ্য দিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি তাকে ধ্বংস করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। তাই আমরা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শপথ করছি- দেশের স্বার্থে নির্বাচন হতে হবে নির্ধারিত সময়ে। এর কোনো বিকল্প নাই।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ও তার দোসররা এখনো ভারতে বসে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। তারা আবার দেশে ফিরে এসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। এই পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় তাহলে এর দায়-দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে। জামায়াতে ইসলামী আর এনসিপিসহ যারা আজকে নির্বাচনের পরিবেশকে নষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছেন, এর দায় কিন্তু আপনাদের নিতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসি, বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল বারেক, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক জামিউল হক সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল ইসলাম পলাশ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান, সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিম প্রমুখ।
পিএ/এসএন