খেলাপি ঋণ নিয়ে পাতানো খেলা চলছে: অর্থনীতিবিদ মইনুল

অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম বলেছেন, সরকারের হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুন মাস পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণ আছে এক লাখ ১২ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা। এর সঙ্গে যোগ হবে ইনজাংশনের কারণে ঝুলে থাকা ৭৯ হাজার ২৪২ কোটি টাকা। স্পেশাল মেনশন অ্যাকাউন্টে আছে ২৭ হাজার ১৯২ কোটি টাকা এবং নিয়মবহির্ভুতভাবে রিশিডিউলিং করা আরও ২১ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা। এই অংকের সাথে অবলোপন করা মন্দ ঋণ যোগ করলে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিন লাখ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যাবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই অধ্যাপক খেলাপি ঋণ নিয়ে ‘পাতানো খেলা’ চলছে দাবি করে তা বন্ধ করে সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে একটি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছেন।

‘ব্যাংকিং খাত নিয়ে উল্টোপাল্টা পদক্ষেপ বন্ধ করুন: ব্যাংকিং সংস্কার কমিশন গঠন করুন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সরকারের প্রতি এই সুপারিশ রাখেন অধ্যাপক মইনুল ইসলাম। শনিবার জতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন) এই সম্মেলনের আয়োজন করে।

অধ্যাপক মইনুল বলেন, ‘আসলে দেশে ব্যাংক ঋণ নিয়ে একটি পাতানো খেলা চলছে।সমস্যার প্রকৃত রূপটি সরকার, ব্যাংকার এবং ঋণখেলাপি সবারই জানা আছে। সমস্যার সমাধানের উপায় সম্পর্কেও এই তিন পক্ষের সবার স্পষ্ট ধারণা আছে। কিন্তু জেনেশুনেই সরকার সমাধানের পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করছে না। ফলে এখনও দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রধান সমস্যা রয়ে গেছে রাঘববোয়াল ঋণ খেলাপিদের কাছে আটকে থাকা বিপুল খেলাপি ঋণ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঋণখেলাপিদের প্রায় সবাই ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, মানে তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, ঋণ ফেরত দেবেন না। কারণ তাদের রাজনৈতিক প্রতিপত্তি এবং আর্থিক প্রতাপ দিয়ে তারা শুধু ব্যাংকিং খাত নয়, দেশের সংসদকেও দখল করে ফেলেছেন। এখনতো দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, এটা আমার কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকারের জোরালো উদ্যোগ না থাকারও সমালোচনা করেন তিনি।

সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে আলোচনার সঞ্চালক ছিলেন সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহীম খালেদ, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এমডি আবু নাসের বখতিয়ার ও কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মাকসুদ।

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাতে ফোন করলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো Dec 08, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে ব্রুনাইয়ের হাইকমিশনারের সাক্ষাৎ Dec 08, 2025
img
দেবকে চিনতেন না রুক্মিণীর বাবা Dec 08, 2025
img
ব্যাংক খাতের রাজনৈতিক অঙ্গনের স্বেচ্ছাচারিতা কারো অজানা নয় : জিল্লুর রহমান Dec 08, 2025
img

জুলাই আগস্ট হত্যাযজ্ঞ

ওবায়দুল কাদের ও যুবলীগ সভাপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ Dec 08, 2025
img
আইনজীবীদের বহর নিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান Dec 08, 2025
img
ইউরোপজুড়ে অভিবাসন বিতর্কে ইতালি এখন কেন্দ্রে Dec 08, 2025
img
পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি আজ Dec 08, 2025
img
মালদ্বীপে বিশেষ অভিযানে ১৮ বিদেশি আটক Dec 08, 2025
img
আইইএলটিএস-এ ভুল ফলাফল ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর, বাংলাদেশে প্রশ্নফাঁস Dec 08, 2025
img
শীতকালে পিরিয়ডে কোন ফলগুলো এড়িয়ে চলবেন Dec 08, 2025
img
আমার কারও প্রতি কোনও রাগ নেই, কোনও আফসোস নেই: নীলাঞ্জনা শর্মা Dec 08, 2025
img
আমার মনে হয় মাতৃত্ব বিষয়টাই কঠিন: নীলাঞ্জনা শর্মা Dec 08, 2025
img
আমি একা থাকতে দারুণ উপভোগ করি: অক্ষয় খান্না Dec 08, 2025
img
মৌসুমের শেষ ম্যাচে ক্রুজেইরোর বিপক্ষে দাপুটে জয় নেইমারের সান্তোসের Dec 08, 2025
img
৩ মাসে কোটিপতি গ্রাহকের আমানত কমেছে ৫৯ হাজার কোটি Dec 08, 2025
img
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে দুঃস্বপ্ন কাটছে না ইংল্যান্ডের Dec 08, 2025
img
শেখ হাসিনার ‘হেভিওয়েট’ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৭ জন ট্রাইব্যুনালে Dec 08, 2025
img
ভারতে রাস্তা থেকে ছিটকে ৬০০ ফুট খাদে যাত্রীবাহী গাড়ি, নিহত ৬ Dec 08, 2025
img
শিল্পকলায় ‘সিরাজ উদ দৌলা’ মঞ্চায়িত হবে আজ Dec 08, 2025