৩২ বছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন চীনা দম্পতি

চুরি যাওয়া ছেলেকে ৩২ বছর পর খুঁজে পেয়েছেন এক চাইনিজ দম্পতি। ১৯৮৮ সালে বাবার সঙ্গে নার্সারি থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহৃত হয়েছিলেন মাও ইন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র আড়াই বছর।

গেল ৩২ বছর ধরে লি জিংঝি ও মাও জেনঝিং দম্পতি তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে খুঁজে বেড়িয়েছে। এই উদ্দেশ্যে ছেলেটির মা লি জিংঝি এক লাখেরও বেশি লিফলেট বিতরণ করেছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন টিভি শোতে উপস্থিত হয়ে তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানের কথা সাধারণ মানুষকে জানানোর চেষ্টা করেছেন, যাতে করে তাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়।

তার এই প্রচারণার ফলে অন্য ২৯টি দম্পতি তাদের সন্তানকে খুঁজে পেয়েছে এবং চীন জুড়ে পরিচিত মুখে পরিণত হয়েছেন তিনি। এ বছরের প্রথম দিকে এক সাক্ষাতকারে লি বলেছিলেন, “আশা আমাকে উদ্যম যোগায়। আমার বিশ্বাস, আমি একদিন তাকে খুঁজে পাবো।” অবশেষে সত্যিই তিনি খুঁজে পেয়েছেন তার ছেলেকে। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার পর ১০ই মে (চীনের মা দিবস) লি এক সাক্ষাতকারে বলেন, “এটি আমার জীবনের সর্বোত্তম উপহার।” এছাড়াও সহযোগিতার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

এ বছরের এপ্রিলে চীনা পুলিশ এক ব্যক্তির সম্পর্কে জানতে পারে, যিনি একটি ছেলেকে চীনের সানচি প্রদেশের জিয়ান নগরী থেকে চুরি করে মাত্র ৬ হাজার ইউয়ানের বিনিময়ে শিনচুয়ান প্রদেশের এক দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেয়। পুলিশ ছেলেটিকে খুঁজে বের করতেও সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ডিএনএ টেস্টের মধ্য দিয়ে জানা যায় ৩৪ বছর বয়স্ক যুবকটি লি জিংঝি ও মাও জেনঝিং দম্পতির হারিয়ে যাওয়া সন্তান মাও ইন।

মাও ইন তার বর্তমান ঠিকানায় গু নিংনিং পরিচয়ে বেড়ে উঠেছেন এবং বর্তমানে একটি হোম ডেকোরেটরের ব্যবসা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত। তিনি জানান, ভবিষ্যতে কি করবেন সেটি এখনও ঠিক না করলেও এই মুহূর্তে খুঁজে পাওয়া মা-বাবার সঙ্গে সময় কাটাতে চান তিনি।

উল্লেখ্য, শিশু পাচার চীনের সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম। তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে চীন কখনো কতজন শিশু হারিয়ে গেছে বা চুরি হয়েছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করে না। তবে বেবি কাম ব্যাক হোম নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে চীনের নিখোঁজ হওয়া ১৪ হাজার ৮৯৩ জন ছেলে ও ৭ হাজার ৪১১ জন মেয়ের খোঁজে পোস্ট রয়েছে। ধারণা করা হয়, প্রকৃত সংখ্যা এর থেকেও অনেক বেশি। তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ ও দ্যা গার্ডিয়ান

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বেক্সিমকোসহ ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের Dec 28, 2025
img
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দল Dec 28, 2025
img
বাংলাদেশি তারকাদের গায়ে দেবের পোশাক Dec 28, 2025
img
যেখানে যৌক্তিক মনে করবেন-সেখানেই নির্বাচন করবেন তারেক রহমান: রিজভী Dec 28, 2025
img
তারেক রহমানকে কটূক্তির অভিযোগে আটক শিক্ষকের জামিন Dec 28, 2025
img
বিকালে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ৮ দলীয় জোট Dec 28, 2025
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ব্রাইটনকে হারিয়ে আর্সেনালের শীর্ষস্থান পুনরুদ্ধার Dec 28, 2025
img
মেসির ফাইনাল বিশ্বকাপ বুটের আকর্ষণীয় চমক Dec 28, 2025
img
পেনশন-ভাতাসহ নয় দফা দাবি জাতীয় ইমাম সমাজের Dec 28, 2025
img
নাহিদের সিদ্ধান্তের ওপরেই আস্থা রাখছেন এনসিপি নেত্রী পারুল Dec 28, 2025
img
শহীদ ওসমান হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে জড়ো হচ্ছেন ছাত্র-জনতা Dec 28, 2025
img
রায়াকে প্রশংসায় ভাসালেন কোচ আর্তেতা Dec 28, 2025
img
শরীয়তপুরে আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিলেন অর্ধশত নেতাকর্মী Dec 28, 2025
img
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার Dec 28, 2025
img
৭১ ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল ঘোষণা Dec 28, 2025
img
৩ মিলিমিটার বাড়তি ঘাসে ১ কোটি ডলার ক্ষতি Dec 28, 2025
img
শীতে ডাব খেলে শরীর কী ধরণের উপকার হয়? Dec 28, 2025
সালমান খানের জন্মদিনে আবেগঘন বার্তা তারকাদের Dec 28, 2025
img
হাদি হত্যার বিচার হতেই হবে: হাবিব Dec 28, 2025
img
প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক করল এনবিআর Dec 28, 2025