ট্রেন দুর্ঘটনা: ছোট্ট ছোঁয়ামনি মর্গে,বাঁচার আশায় বাবা-মাকে আনা হলো ঢাকায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেছে ছোট্ট শিশু ছোঁয়া মনি। তার ছোট্ট দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য এখন পড়ে আছে মর্গে। আর গুরুতর আহত তার বাবা-মাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে আসা হয়েছে ঢাকায়। উন্নত চিকিৎসা দিয়ে যদি তাদের বাঁচিয়ে রাখা যায় সেই আশায়।

শিশু ছোঁয়া মনির বাবার নাম সোহেল মিয়া, মা নাজমা বেগম। গতকাল সোমবার ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মন্দবাগে মর্মান্তির ট্রেন দুর্ঘটনায় তারা তিন জনই গুরুতর আহত হন। অনেকের সঙ্গে তাদেরকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছোট্ট ছোঁয়া মনি হাসপাতালে যাওয়ার পর মারা যায়, আর গুরুতর আহত তার বাবা-মাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ছোঁয়া মনির মামা জামাল মিয়া ভাগ্নির লাশ নিতে কখনো ছুটছেন হাসপাতালের মর্গে কখনো বা আবার পুলিশের কাছে। বোন ও বোনের জামাইয়ের খোঁজও নিতে পারছেন না তিনি।

জামাল মিয়া তার ভাগ্নির লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের জন্য আজ মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।

ছোঁয়া মনির লাশ নিতে চেয়ে করা আবেদনপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘আপনার বরাবরে এই মর্মে আবেদন করিতেছি যে, আমার অধুনামৃত ভাগ্নি ছোঁয়া মনি, বয়স অনুমান ৩ বৎসর, পিতা: সোহেল মিয়া, মাতা: নাজমা বেগম, গ্রাম: বানিয়াচং, পোস্ট বানিয়াচং, থানা বানিয়াচং, জেলা: হবিগঞ্জ অদ্য ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার ভোর অনুমান ৪ ঘটিকার সময় মন্দবাগ রেলস্টেশনে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হইলে আমার ভাগ্নি ছোঁয়া মনিকে উদ্ধার করিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আমার ভাগ্নি ছোঁয়া মনিকে মৃত বলিয়া ঘোষণা করেন। বর্তমানে আমার অধুনামৃত ভাগ্নির লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। এ ব্যাপারে আমাদের পরিবারের পক্ষ হইতে আমার ভাগ্নির মৃত্যুর ব্যাপারে কোনো অভিযোগ নাই বা কোনো প্রকার মামলা মোকদ্দমা করিব না বলিয়া আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইতেছি।’

প্রসঙ্গত, সোমবার দিবাগত রাত ২টা ৪৮ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটির মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক।

 

টাইমস/এমএস 

Share this news on: