বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলা বাংলাদেশকে ছিঁড়ে ফেলার সমান। একজন মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলেছে এ কথা শোনার আগে আমার মৃত্যু হওয়া ভালো ছিল। শুধু পাস করলেই ডাক্তার হওয়া যায় না, ডাক্তার হতে হলে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন হতে হয়। ডাক্তারকে বরখাস্ত ও গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
সোমবার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়াকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
উল্লেখ, মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়া ভাঙ্গা পা নিয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি কাদেরিয়া বাহিনীর অধীনে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। তার কোম্পানি কমান্ডার ছিলেন বর্তমান কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়া অভিযোগ করে বলেন, ডা. শহীদুল্লাহ কায়সার আমাকে দেখতে আসেন। আমার ফাইলে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেখে তিনি রেগে যান। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট এখানে কেন? সার্টিফিকেট চিকিৎসা করবে না আমরা চিকিৎসা করব।’ পরে ডা. শহীদুল্লাহ সার্টিফিকেটটি ফাইল থেকে ছিঁড়ে ফেলেন।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নারায়ণ চন্দ্র সাহা। তিনি বলেন, আগামী পাঁচদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদন সাপেক্ষে ডা. শহীদুল্লাহ কায়সারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়ে ফেলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার পরিপন্থী কাজ। অভিযুক্ত ডাক্তারের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই অভিযোগ সম্পর্কে ডা. শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট ছিঁড়ে ফেলিনি। ফাইল থেকে সনদ হারিয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় ফাইল থেকে পিন খুলে সনদটি তার হাতে দেই। কারণ চিকিৎসার ফাইল বিভিন্ন টেবিলে যায়। তবে ফাইল থেকে সনদ খুলে রাখার ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান ভূঁইয়া মনে কষ্ট পেয়েছেন। এটা শুনে আমি কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সামনে তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছি।
টাইমস/টিএইচ