বরিশালে প্রধান শিক্ষকসহ তিনজনের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২ টার দিকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অস্ত্রোপচারে নবজাতকের জন্ম হয়।
অপারেশনে অংশগ্রহণকারী হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক ডা. বি সি বিশ্বাস বিধান জানান, নবজাতক ওই শিশু এবং তার মা দুই জনই ঝুঁকিতে রয়েছে। নবজাতক শিশুটিকে নবজাতকের বিশেষ পরিচর্যা কেন্দ্রে (স্ক্যানু) রাখা হয়েছে। নবজাতকের শরীরের ওজন কমসহ নানা সমস্যা রয়েছে। অপরদিকে তার মাকে অপারেশন পরবর্তী পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তার শরীরে জ্বরসহ নানা সমস্যার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসক।
ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল গ্রামের একটি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান এই স্কুলছাত্রী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার ছোট। তার মা বিভিন্ন বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেন এবং বাবা সবজি বিক্রি করেন।
একই ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বাবুল চাপরাশী এবং একই বাড়ির চাচা সম্পর্কের জুয়েল ও রনির ধারাবাহিক ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে শিশুটি। ১০ ডিসেম্বর থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে সে। হাসপাতালের প্রশাসনসহ তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছে ‘ভোলা ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’ নামের একটি সংগঠন।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বাবুল চাপরাশী এবং একই বাড়ির চাচা সম্পর্কের জুয়েল ও রনির ধারাবাহিক ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে শিশুটি। ১০ ডিসেম্বর থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে সে। হাসপাতালের প্রশাসনসহ তার চিকিৎসার খোঁজ-খবর রাখছে ‘ভোলা ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’ নামের একটি সংগঠন।
ধর্ষণের শিকার ছাত্রীটি জানায়, প্রায় এক বছর আগে প্রধান শিক্ষক বাবুল বিদ্যালয় ভবনের তিনতলায় লাইব্রেরি কক্ষে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর প্রায়ই সহকারী শিক্ষিকা রেবাকে দিয়ে তাকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক ধর্ষণ করত। রেবা লাইব্রেরির বাইরে পাহারায় থাকত। পরে একই বাড়ির সম্পর্কে চাচা জুয়েলও বাবা-মায়ের অনুপস্থিতিতে তাকে ধর্ষণ করত। এছাড়া রনি নামের এক প্রতিবেশীও তাকে ধর্ষণ করে। গর্ভের চার মাসের সময় শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন হলে মায়ের চাপের মুখে তার কাছে সবকিছু খুলে বলে। তখন প্রধান শিক্ষকের চাপের মুখে শুধু জুয়েলকে আসামি করে মামলা করেন শিশুটির মা।
এদিকে, তিন জনের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটি একটি কন্যা সন্তান প্রসব করলেও তার পিতৃপরিচয় এখনও অজানা। শিশুটির স্বজনরা ওই নবজাতকের পিতৃপরিচয় উদঘাটন এবং ধর্ষণের অভিযুক্তদের কঠোর বিচার দাবি করেন।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম বলেন, ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে শুধু জুয়েলকে আসামি করে মামলা করেন। ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে সে এ মামলায় কারাগারে। এছাড়া ওই শিশু শুধু জুয়েলকে দায়ী করে ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার চার্জশিটও দেয়া হয়েছে।
এদিকে কন্যা সন্তান প্রসবের খবরে বিকালে হাসপাতাল পরিদর্শনে যান বরিশালের পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম। এ সময় তিনি নবজাতকের পিতৃপরিচয় উদঘাটনে অভিযুক্তদের ডিএনএ পরীক্ষা করারসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
এর আগে, সকালে বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান ওই প্রসূতি শিশুর সাথে দেখা করে তার চিকিৎসার সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসা সহায়তার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা অনুদান দেন। এ সময় শিশুটিকে ধর্ষণে অভিযুক্ত সকলকে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। একই সাথে ভোজমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
টাইমস/এইচইউ