চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিভিন্ন অনিয়মের খবর পেয়ে গোপনে পরিদর্শনে গিয়েছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
রোববার সকালে সাড়ে ৮টার দিকে গোপনে চট্টগ্রাম যান এবং ৯ টার দিকে স্কুল পরিদর্শন করেন ইকবাল মাহমুদ।
এসময় স্কুলের অনিয়ম নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনি-মিনি খেলতে দেওয়া হবে না। যে কোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছে বিশেষ মাধ্যমে খবর আসে চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। বিষয়টি গোপন রেখে দুদক চেয়ারম্যান রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম যান এবং সোয়া ৯টার দিকে নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।
তিনি স্কুলে ঢুকে সরেজমিনে দেখেন স্কুলের আটজন শিক্ষকের মধ্যে একমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত। বাকি সাতজন শিক্ষকই অনুপস্থিত। ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের আশে-পাশে আচার-চানাচুর খেয়ে অলস সময় পার করছে।
অভিভাবকরা সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনি-মিনি খেলত দেওয়া হবে না। যে কোনো মূল্যে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ড বিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে।
এর পরপরই দুদক চেয়ারম্যান নগরীর ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন শিক্ষক অনুপস্থিত পান। এদের অনুপস্থিতির কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষ দুদক চেয়ারম্যানকে জানাতে পারেননি।
এসময় তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি শিট পরীক্ষা করে দেখেন, অনেক অনুপস্থিত শিক্ষার্থীকেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার রোববার বেলা ১০টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রোল কল করা হয়নি। এ বিষয়েও স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এরপর চট্টগ্রামের শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় সুযোগ (সেন্ট-আপ) দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অবহিত হয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান।
তবে ফেল করা ছাত্র-ছাত্রীদের ২ হাজার টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণীতে প্রোমোশন দেওয়ার অভিযোগ পান তিনি। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, এটা অনৈতিক। শিক্ষাক্ষেত্রে অনৈতিকতার কোনো স্থান থাকতে পারে না।
টাইমস/এএস/ কেআরএস