বয়ফ্রেন্ডের কাণ্ড : গর্ভপাতে ছাত্রীর মৃত্যু করোনায় বলে প্রচার!

চট্টগ্রামে বয়ফ্রেন্ডের লালসার শিকার হয়ে প্রাণ গেছে কলেজ ছাত্রী রিফাতের। গর্ভপাতের সময় ভুল অপারেশনে ওই কলেজ ছাত্রীর প্রাণ গেলেও করোনায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার চালানো হয়। এঘটনায় ওই কলেজ ছাত্রীর বয়ফ্রেন্ড জিসানকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনার ৬ মাস পর ক্লিনিক পরিচালক হারুনুর রশীদসহ আরও ৪জনকে গ্রেফতার করা হলে মূল ঘটনা প্রকাশ পায়। চট্টগ্রাম মেট্রোলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান। গ্রেফতার অপর তিনজন হলেন- কথিত নার্স অলকা পাল (৩২), আয়া গীতা দাস (৪৫) ও নার্স সাবিনা ইয়াসমিন চম্পা (৪৩)।

জানা গেছে, গত ১৫ মে অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটনোর সময় সিটি হেলথ ক্লিনিকে রিফাত সুলতানা (২৫) নামে ওই কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরপরই কলেজ ছাত্রীর কথিত বন্ধু জিসানকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ১৫ মে কলেজছাত্রী রিফাতের অবৈধভাবে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে আসামিরা। এ সময় হাতুড়ে নার্সের সাহায্যে রিফাতের গর্ভপাত ঘটাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতালের পরিচালক ও সংশ্লিষ্টরা ঘটনা ধামাচাপা দিতে নিহতের পরিবারকে করোনায় রিফাতের মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়।

চট্টগ্রাম মেট্রোলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে আমরা দেখেছি ওই ধরনের সেবা যে ধরনের চিকিৎসক দিয়ে করানো প্রয়োজন, এই ক্লিনিকে সেই ধরনের কোনও চিকিৎসক বা নার্স সেখানে ছিল না। কোনও ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি নেই এমন দুইজন নার্স ও একজন আয়া গর্ভপাত করানোর কাজটি করেছেন। যেই কারণে অপচিকিৎসার কারণেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।

মেহেদী হাসান আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে একজন নার্স শিকার করেছেন-গর্ভপাত করানোর সময় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে নার্সরা বারবার ডাক্তার ডাকার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ক্লিনিকের পরিচালক হারুনুর রশিদ বিষয়টি অবহেলা করেন। পরবর্তীতে ওই কলেজ ছাত্রী মারা যাওয়ার পর ক্লিনিকের পরিচালক নিহতের অভিভাবককে ডেকে নিয়ে বলে আপনার মেয়ের করোনা হয়েছিল এবং করোনার কারণে তিনি মারা গেছেন।

পরে ওই ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই কলেজ ছাত্রীর বাবা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। কলেজ ছাত্রীর বাবা খোকন মিয়াজি জানান, রিফাত ও তার ছোট বোন রিয়াদ সুলতানা নগরীর চান্দগাঁও আবাসিকে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে এপ্রিল মাসে তারা গ্রামের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ায় চলে আসেন। এরপর ১৩ মে বাসায় থাকা কম্পিউটার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রিফাত শহরে আসে। পরদিন ১৪ মে তার বোনকে (রিয়াদ সুলতানা) কল করে বলে সে অসুস্থ পরদিন সকালে চলে আসবে। এরপর ১৫ মে আমরা রিফাতের মৃত্যুর সংবাদ পাই। জিসান নামে এক যুবক ফোন কলে আমাকে বলে আপনার মেয়ে মারা গেছে।

 

টাইমস/জেকে/আরএ/এসএন

Share this news on: