চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যা: চালকের পর কন্ডাক্টরও গ্রেপ্তার  

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলন্ত বাস থেকে যাত্রীকে ফেলে চাপা দিয়ে হত্যার অভিযোগে চালকের পর বাসটির কন্ডাক্টরকেও (চালকের সহযোগী) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

সোমবার রাতে শেরপুরের নন্দীবাজার এলাকা থেকে বাস কন্ডাক্টর আনোয়ার হোসেনকে (৩০) গ্রেপ্তার করা হয়।

জয়দেবপুর থানার এসআই সাদেকুর রহমান জানান, সোমবার বিকেলে ভারত পালিয়ে যাওয়ার সময় ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া থানা সীমান্ত এলাকার কংস নদ থেকে অভিযুক্ত বাসচালক রোকন উদ্দিনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে নিয়ে অভিযুক্ত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়।

তিরি আরও জানান, রাতে চালক রোকন উদ্দিনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে কৌশলে বাস কন্ডাক্টর আনোয়ারকে তার বাড়ির পার্শ্ববর্তী নন্দীবাজার এলাকায় ডেকে আনা হয়। রাত ৯টার দিকে আনোয়ার পুলিশের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বাজারসংলগ্ন একটি নির্জন স্থানে পৌঁছায়। সে সময় ওত পেতে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে রাতেই সেখান থেকে গ্রেপ্তার চালক ও কন্ডাক্টরকে নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ। 

এর আগে রোববার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকায় সালাউদ্দিন (৪৬) নামে এক যাত্রীকে চলন্ত বাস থেকে নিচে ফেলে হত্যা করা হয়। সালাউদ্দিন ঢাকার সিদ্দিকবাজার এলাকার মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে। তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বাঘের বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

নিহত সালাউদ্দিনের ভাই জামাল জানান, ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলায় শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলো সালাউদ্দিন। সেখান থেকে গাজীপুরে কর্মস্থলে ফেরার পথে লাশ হয়েছে ভাই আমার। লাত্থি মাইরা ফালাইয়া দিছে। ফালাইয়া দিয়া গাড়ি তার ওপর দিয়া নিছে। আমি নিজে দেখছি। আমি এর বিচার চাই।

মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি দেলোয়ার হুসেন জানান, বাস ভাড়া নিয়ে সালাউদ্দিনের সাথে চালকের সহযোগীর বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চালকের সহযোগী ধাক্কা দিয়ে সালাউদ্দিনকে ফেলে দেবে বলে বাসের ভেতরেই প্রকাশ্যে হুমকি দেন। ভয় পেয়ে সালাউদ্দিন তার ভাই জামালকে টেলিফোনে বাঘের বাজার বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াতে বলেন। পরে জামাল আরো পাঁচ-ছয়জন লোক নিয়ে বাঘের বাজার দাঁড়িয়ে থাকেন।

তিনি আরো বলেন, আলম এশিয়ার বাসচালকের সহযোগী স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনদের সামনেই সালাউদ্দিনকে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেন। বাসচালক সালাউদ্দিনের ওপর দিয়ে বাস উঠিয়ে তাকে হত্যা করেন।

এদিকে ওই ঘটনায় রাতে নিহতের ছোট ভাই জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তাতে বাসের চালক, কন্ডাক্টর, হেলপার ও সুপারভাইজারকে আসামি করা হয়। পরে সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া থেকে চালক রোকন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আর রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বাস কন্ডাক্টর আনোয়ার হোসেনকে।

আরও পড়ুন...

চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় চালক গ্রেপ্তার

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: