সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার ব্যবসায়ী রাজন আহমেদ। ১৮ বছর আগে বিয়ে করেন গুলশানারা পারভীন পান্না নামে এক নারীকে। এই দম্পতির ১৬ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
গুলশানারা পারভীন পান্না বর্তমানে উল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। এর আগে তিনি ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন।
সুখেই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু সুখের এই সংসার আঁধার হয়ে আসেন উল্লাপাড়ার পৌর মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা এস এম নজরুল ইসলাম।
পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রাজনের স্ত্রী গুলশান আরা পান্নাকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে করেছেন।
এ ঘটনা সম্পর্কে যা জানা যাচ্ছে
কয়েক বছর আগে মেয়র নজরুল ইসলাম পৌর এলাকার ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যান। ওই অনুষ্ঠানেই মেয়রের নজরে পড়ে যান সহকারী শিক্ষিকা গুলশানারা পারভীন পান্না। এরপর থেকেই পান্নাকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেন মেয়র নজরুল। কোনোভাবেই যখন পান্না রাজি হয়নি তখন ক্ষমতার দাপট ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রভাব দেখিয়ে পান্নাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করেন মেয়র। এ বিষয়ে কোনো মামলা করলে পান্নার স্বামী রাজন ও তার সন্তানকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। ভয়ে কোথাও অভিযোগ দায়ের করেননি পান্নার স্বামী রাজন।
সম্প্রতি দ্বিতীয় স্ত্রী পান্নাকে নিয়ে হানিমুন করে আসেন মেয়র নজরুল। হানিমুনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার পর তা ভাইরাল হয়। তারপর থেকেই মেয়রের দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনা নিয়ে অনেকেই মুখ খুলছেন।
হানিমুন থেকে এসেই স্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে মেয়র নজরুল ইসলামকে। অভিযোগ আছে, স্কুলেও তেমন যাচ্ছেন না গুলশান আরা পান্না।
পান্নার স্বামী ব্যবসায়ী রাজন আহমেদ বলেন, ‘আমার দীর্ঘ ১৮ বছরের সংসার ভেঙে তছনছ করে দিয়েছেন মেয়র নজরুল। আমাদের একটি মাত্র সন্তান। আমার স্ত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ে করায় আমার মান-মর্যাদা ধুলায় মিশে গেছে। আমার সন্তানও স্কুলে মর্যাদা পায় না। বহু কষ্টে জীবনযাপন করছি আমরা।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘কোথাও অভিযোগ করলেই আমাকে হত্যা করা হবে বলে ভয় দেখায়। তাদের ভয়ে আমি কোনো ব্যবস্থা নেইনি। তবে মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হলে সকল আইনি ব্যবস্থা আমি গ্রহণ করব।’
উল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন রায় বলেন, ‘ঝিড়িকা বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকতে পান্নার সঙ্গে মেয়র নজরুল ইসলামের বিয়ে হয়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। পৌর এলাকায় স্কুল, পৌর এলাকার মেয়রের স্ত্রী, ফাঁকি দিলে আমাদের কিছু করার থাকে না।’
এ বিষয় জানতে চাইলে পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, গুলশানারা পারভীন পান্না আমার স্ত্রী। তবে দ্বিতীয় বিয়ে সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মেয়র নজরুল।
মেয়র নজরুলের প্রথম স্ত্রীর পরকীয়ার ভিডিও ছড়িয়েছিল দুই বছর আগে
নজরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী ও এক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে অন্তরঙ্গ ভিডিও ছড়িয়েছিল দুই বছর আগে। ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর উল্লাপাড়া মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদের সঙ্গে ২৫ মিনিটের একটি অন্তরঙ্গ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর মেয়র নজরুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। আর স্কুল কমিটি প্রধান শিক্ষক আব্দুল মজিদকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে।
টাইমস/এসআই