সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোহেল তাজ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতির জনক। এ নিয়ে সন্দেহ কিংবা বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য। যতদিন পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশের মহান স্থপতি এবং জাতির পিতা হিসাবে বঙ্গবন্ধুর নাম স্বর্ণোজ্জ্বল আলোয় আলোকিত থাকবে।
শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে এসব মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল তিনি। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণী দিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
গত ২৩ জুলাই তাজউদ্দীন আহমদের ৯৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে 'সিতারা' (সেন্টার ফর তাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ এন্ড এক্টিভিজম) এর উদ্যোগে ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে তাজউদ্দীন আহমদের কর্ম ও জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়।
কিন্তু ওই আলোচনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর অবদানকে ছোট করে দেখানো হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকজন অভিযোগ তোলেন। ওই সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল তাজ তার ফেসবুক পেইজে এনিয়ে একটি পোস্ট করেন। যা পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘অতি দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করলাম যে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল অসৎ উদ্দেশ্যে এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টির লক্ষে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা বলছেন- তাজউদ্দীন আহমদ, তার দেশপ্রেম এবং দেশের প্রতি তার অপরিসীম অবদান নিয়ে আলোচনা করার অর্থ নাকি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটাক্ষ করা।
উল্লেখ্য যে, আমাদের জানা মতে, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত যে সকল আলাপ-আলোচনা ও লেখালেখি হয়েছে, সেখানে জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কোনো ধরনের কটুক্তি দৃশ্যমান হয়নি।
বঙ্গবন্ধু বাঙালী জাতির জনক, তিনি জাতির পিতা। এই নিয়ে কোনো সন্দেহ বা বিতর্ক থাকতে পারেনা। তার কোনো অবকাশ নেই। বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য ও যতদিন পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি এবং জাতির পিতা হিসাবে স্বর্ণোজ্জ্বল আলোয় তিনি আলোকিত থাকবেন।
কিন্তু আমরা খুবই বিস্মিত ও দুঃখিত হলাম, যখন শাহ্ আলী ফরহাদ নামের এক ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের স্ট্যাটাস আমাদের নজরে আসে। (আমরা তার বাপ/দাদা পরিবার বা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ভদ্রতার খাতিরে এখানে উল্লেখ করছি না) তার স্ট্যাটাসে তিনি এই বিভ্রান্তিমূলক ও আপত্তিকর লেখা লিখেছেন।
এখন বিষয় হচ্ছে, যার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব প্রচার করা হচ্ছে, তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি পদে কর্তব্যরত আছেন। স্বাভাবিকভাবেই জনমনে প্রশ্ন আসে, এটা কি তার ব্যক্তিগত অভিমত? এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কি এই ধরনের মতামত সমর্থন করেন? আর যদি সমর্থন না করেন, তাহলে আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই মর্মে একটি বিবৃতি দেয়া হবে।
এছাড়া যদি এটা কোনো ব্যক্তিগত অভিমত হয়ে থাকে, তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের খতিয়ে দেখা উচিত এইখানে তার কোনো ব্যক্তিগত অসৎ উদ্দেশ্য আছে কিনা। কারন এসব উস্কানিমূলক কথাবার্তা তারই ইঙ্গিত দেয়।
পাশাপাশি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের গবেষণা শাখা সিআরআই এর প্রধান হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম অভিমত প্রকাশের মাধ্যমে তিনি সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন। বাংলাদেশের ইতিহাস বিকৃত করছেন এবং বঙ্গবন্ধু ও সোনার বাংলার অবমাননা করছেন। আর যদি আসলেই ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে হয় সঠিক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে ইতিহাসের কাছে যেতে হবে ও আমরা মনে করি জাতির স্বার্থে উন্মুক্ত আলোচনা, উন্মুক্ত প্রবাহের মাধ্যমে তা করা প্রয়োজন। যেখানে সংশ্লিষ্ট সকলের অংশগ্রহণ থাকবে।
টাইমস/এসএন