ধর্মের অপব্যবহার করা যাবে না: কামাল হোসেন

গণফোরামের সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন,  সংবিধানেও আছে ধর্মকে অপব্যবহার করা যাবে না। আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক- এই নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সব ধর্মের সঙ্গে সম্প্রীতি গড়ে তোলা। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই মানুষের সকল অধিকারকে রক্ষা করতে হবে। ধর্মের নামে বৈষম্য আমাদের দেশে নেই।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় আহত ও নিহতদের প্রতি শোক ও সংহতি শীর্ষক আলোচনায় এমন আহ্বান জানান দেশের রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক বিশিষ্টজনেরা। ক্রাইস্টচার্চে হামলার পর শান্তি ও সম্প্রীতির অনন্য নজির স্থাপনের জন্য জেসিন্ডাকে শান্তিতে নোবেল দেওয়ার দাবি করেন বক্তারা।

কামাল হোসেন বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্যকে বিনষ্ট করা সংবিধানসম্মত না, অনেক ক্ষেত্রে মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করতে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য ধর্মকে ব্যবহার করা নয়। কিন্তু রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাদের ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য ধর্মকে অপব্যবহার করছে। বর্তমানে ধর্মকে অপব্যবহার করে মানুষের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর থেকে অনেক কিছু শেখার আছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশেও অনেক নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী গুম খুনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু কাউকে লজ্জিত হতে দেখা যায়নি।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ধর্ম যখন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয়, তখনই তা মানবতাবিরোধী কাজে লিপ্ত হয়।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের ঠিক একটা বিপরীত জগতে আমরা বসবাস করছি। আমরা মানবতার চাষ করি না, হিংসার চাষ করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র ও রাজনীতির মধ্যে ধর্ম আনা যাবে না।’

বাংলাদেশে কোনো ঘটনা ঘটলেই ঘৃণা ও বিভাজন ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলে উল্লেখ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, মতবিরোধ, সমালোচনা থাকবে কিন্তু বিভাজন দূর করে রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করতে জেসিন্ডা নতুন দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন।

আলোচনা সভায় জেসিন্ডাকে ‘প্রকৃত মানবতার মা’ উপাধি দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, বর্বরোচিত হামলার মাধ্যমে হামলাকারী যে অন্ধকার ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন, তা প্রতিরোধ করে দিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ও সাধারণ মানুষ।

সূচনা বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির সভাপতি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম এবং সঞ্চালনা করেন জামায়াতের বহিষ্কৃত নেতা মজিবুর রহমান (মঞ্জু)। বিভেদ, বিদ্বেষ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে সংহতি জানিয়ে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা চিকিৎসক জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব:) ফজলে এলাহী আকবর, সাবেক সচিব মোফাজ্জল করিম চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী প্রমুখ।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
রাজধানীতে সিটি করপোরেশনের গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থীর Dec 12, 2025
img
নির্বাচন যত সহজ ভাবা হচ্ছে তত সহজ হবে না: তারেক রহমান Dec 12, 2025
img
সীমান্তে সংঘাতের মধ্যেই পার্লামেন্ট ভেঙে দিল থাইল্যান্ড Dec 12, 2025
img
স্থায়িত্ব বজায় রাখাই বড় কাজ: প্রধান বিচারপতি Dec 12, 2025
img
কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে : সেনাপ্রধান Dec 12, 2025
img
বাংলাদেশ ও মঙ্গোলিয়ার মধ্যে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষরিত Dec 12, 2025
img
ভোটগ্রহণে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা না পাওয়া গেলে বেসরকারি ব্যাংক থেকে নিয়োগ Dec 12, 2025
img
দলমত নির্বিশেষে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করি : আব্দুল্লাহ Dec 12, 2025
img
বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য-মালদ্বীপ ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারে বৈঠক Dec 12, 2025
img
ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ল ১৬০৬ কোটি টাকা Dec 12, 2025
img
জাদুঘর থেকে ব্রিটিশ আমলের ৬০০ এর বেশি নিদর্শন চুরি Dec 12, 2025
img
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত ৬ জাহাজের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা Dec 12, 2025
img
কক্সবাজার শত্রুমুক্ত দিবস আজ Dec 12, 2025
img
পাকিস্তানের সাবেক গোয়েন্দা প্রধানের ১৪ বছরের কারাদণ্ড Dec 12, 2025
img
রাখাইনে হাসপাতালে জান্তার বিমান হামলা, নিহত বেড়ে ৩৪ Dec 12, 2025
img
ইউক্রেনে ‘স্পেশাল ইকোনমিক জোন’ চায় যুক্তরাষ্ট্র: জেলেনস্কি Dec 12, 2025
img
আজ থেকে মাঠে নামছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা Dec 12, 2025
img
বিশ্ববাজারে আরও বাড়ল স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে রুপাও Dec 12, 2025
img
আমাদের প্রেম সত্যিই ছিল: হেমা মালিনী Dec 12, 2025
img
তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে গোপালগঞ্জে আনন্দ মিছিল Dec 12, 2025