স্টেনক্যাম্পের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গল্প

দক্ষিণ আফ্রিকার সফল অ্যাথলেটদের একজন রিকেনেট স্টেনক্যাম্প। ছয় বছর বয়স থেকেই তিনি একজন ক্রীড়াবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন এবং এক সময় নিজেকে একজন দৌড়বিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।

মাত্র ২২ বছর বয়সেই তিনি ট্র্যাকে ও মাঠে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি লাভ করেন এবং নিঃসন্দেহে তার ক্যারিয়ার একটি বড় অর্জনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। তার এই যাত্রা চিরকাল অব্যাহত থাকবে বলেই তিনি কল্পনা করেছিলেন।

কিন্তু ২০১৬ সালে ডাক্তার যখন তার পায়ের গোড়ালিতে অতিরিক্ত অস্থি আবিষ্কার করল, তখন মনে হলো তার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। তিনি যতই দৌড়াচ্ছিলেন গোড়ালির ব্যাথা ততটাই তীব্র হচ্ছিল। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত অস্থি সরাতে ডাক্তার তাকে সার্জারি করতে বললেন। সার্জারির কারণে দুই বছর তাকে বিছানায় থাকতে হয়েছিল। এই বেদনাদায়ক মুহূর্তগুলো তাকে চরম হতাশার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল।

স্টেনক্যাম্প বলেন, আমার মনে হচ্ছিল যে আমি যেন পুরো পৃথিবী থেকে আড়াল ও বিস্মৃত হয়ে গেছি। এই প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও স্টেনক্যাম্প আবারো দৌড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। এমন কি, এ জন্য যদি তাকে নতুন করে হাঁটা শিখতে হয় তাও তিনি শিখবেন।

স্টেনক্যাম্প নিজেকে আত্মবিশ্বাস দিয়ে বলতেন, তুমি একদিন সেরে ওঠবে, তুমি আবারো দৌড়াবে। তিনি বিশ্বাস করতেন, চ্যালেঞ্জ কখনো কারো অগ্রযাত্রায় বাধা হয় না, বরং এটি তাকে বাধা মোকাবেলা করতে তৈরি করে।

একটি কঠোর এবং বিরামহীন পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার পরে ২০১৭ সালে তিনি আবার খেলাধুলায় ফিরে আসেন এবং তিনি আগের চেয়ে আরও ভাল ছিলেন। এমনকি যখন তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা কঠোর অনুশীলনে ব্যাস্ত, তখনও তিনি বিশ্রামে থাকতে বাধ্য ছিলেন। কিন্তু কোনো কিছুই তার সাফল্যের পথে বাধা হতে পারেনি? কারণ স্টেনক্যাম্প জানতেন যে, তিনি চ্যাম্পিয়ন হতে চান।

অবশেষে তিনি রেকর্ড ভেঙে ফিরলেন যা গত কয়েক দশকেও ক্রীড়াবিশ্ব দেখেনি। ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মহিলাদের ১০০ মিটার দৌড়ে সবচেয়ে কম সময় নিয়ে রেকর্ড গড়েন স্টেনক্যাম্প। এর কয়েক সপ্তাহ পর তিনি ১২.৮১ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড়ে নিজের রেকর্ড ভেঙে ফেলেন।

তার এই বিস্ময়কর প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে তিনি বলেন, আপনার ভাগ্য থেকে কিছুই আপনাকে ফেরাতে পারে না।

Share this news on:

সর্বশেষ

ট্রাম্পের ২৮ দফা শান্তি প্রস্তাবে কিয়েভ–ইউরোপের আপত্তি Nov 25, 2025
শীতকালের আমল Nov 25, 2025
নির্বাচন সামনে রেখে বড় সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের . Nov 25, 2025
রাজশাহীতে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত. Nov 25, 2025
img
‘দিবাস্বপ্ন দেখা বন্ধ করুন’, ভারতকে কঠোর বার্তা সিন্ধুর মুখ্যমন্ত্রীর Nov 25, 2025
img
ইউনেস্কো’র আন্তঃরাষ্ট্রীয় পর্ষদের নির্বাচনে জয়লাভ বাংলাদেশের Nov 25, 2025
কীভাবে ধনকুবের হলেন বলিউডের ‘হি-ম্যান’? Nov 25, 2025
img
উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দক্ষিণ কোরিয়ার, সংঘাতের আশঙ্কা Nov 25, 2025
img
জেতার জন্য যত দরকার সেই রান করবে বাংলাদেশ: আব্দুর রাজ্জাক Nov 25, 2025
img
প্রবাসীদের জন্য কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কুয়েত, ডিসেম্বরে কার্যকর Nov 25, 2025
img
আগামী আরও ১০ বছর পিএসএলে থাকবে পুরোনো ৩ ফ্র্যাঞ্চাইজি Nov 25, 2025
img
শি-ট্রাম্প ফোনালাপ: এপ্রিলে বেইজিং সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট Nov 25, 2025
img
পদ ফিরে পেলেন বিএনপির আরো ৬৫ নেতা Nov 25, 2025
img
‘তেরে ইশ্‌ক মে’ মুভিতে ধানুশ-কৃতি শ্যাননের জুটি ফিরিয়ে আনছে রোম্যান্সের জাদু Nov 25, 2025
নির্বাচন সামনে রেখে বড় সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের Nov 25, 2025
রাজশাহীতে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত Nov 25, 2025
img
ভারতের জন্য দুঃসংবাদ Nov 25, 2025
img
দাবার মহাতারকার চরিত্রে দুলকর সালমানের অভিনয়ের সম্ভাবনা Nov 25, 2025
img
মুজছে শাদি কারোগি স্মৃতিতে ফের আলোচনায় প্রিয়াঙ্কা Nov 25, 2025
img
টরন্টোতে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা কানাডা প্রবাসীদের সুরের সাগরে আবিষ্ট রাখলেন বন্যা Nov 25, 2025