পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের চীন সফর শেষে মোট ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সফরকালে পাকিস্তানি ও চীনা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এসব চুক্তি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্প সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই চুক্তির গুরুত্ব তুলে ধরেন।
চুক্তির পাশাপাশি উভয় দেশ ৭ বিলিয়ন ডলারের সমঝোতা স্মারকেও স্বাক্ষর করে। এসব সমঝোতা প্রকল্প পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী জানান, এসব সমঝোতা স্মারক ও চুক্তির বাস্তবায়নের জন্য স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।
চীন সফরের শেষে এক বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ‘আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন চুক্তি ও উদ্যোগ উভয় দেশের জন্য বাস্তব সুফল বয়ে আনবে।
বৃহস্পতিবার চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াংয়ের সঙ্গে বেইজিংয়ে বৈঠক করেন শেহবাজ শরিফ। এ সময় দুই দেশের প্রতিনিধি দল পর্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং সিপিইসি (চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর) দ্বিতীয় ধাপের আওতায় নতুন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
উভয় দেশ পাঁচটি নতুন অর্থনৈতিক করিডর চালুর বিষয়ে সম্মত হয়। যার মধ্যে কৃষি, খনন ও খনিজ, টেক্সটাইল, শিল্প এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মিডিয়া ও কৃষি খাতে সহযোগিতাও জোরদার করা হয়।
দুই নেতা সর্বকালীন কৌশলগত সহযোগিতা অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করার অঙ্গীকার করেন। এ সময় একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা স্বাক্ষরিত হয়, যা পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনের অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ পাকিস্তানের চীনা মূলধন বাজারে ‘পান্ডা বন্ড’ ইস্যু করার পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি করাকোরাম হাইওয়ে পুনঃসংলগ্নকরণ, মেইন লাইন-১ রেলপথ উন্নয়ন ও গওয়াদার বন্দর সচল করার মতো গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
শেহবাজ শরিফ জানান, আসন্ন বেইজিং বিনিয়োগ সম্মেলনে ৩০০-এরও বেশি পাকিস্তানি ও ৫০০ চীনা কোম্পানি অংশ নেবে। এতে ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহযোগিতার সুযোগ বাড়াবে।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও তার প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন। এতে দুই দেশের অভিন্ন ভিশন- অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কৌশলগত সহযোগিতার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
ইএ/এসএন