বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কের সুযোগ-সুবিধা আমার দেখা সেরা : পাইবাস

বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ রিচার্ড পাইবাস আবারও ঢাকায় ফিরেছেন। তবে এবার অন্য দায়িত্ব নিয়ে। তিনি এসেছেন বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কের ডেভেলপমেন্ট ও ট্রেনিং পরিচালক হিসেবে। এখানে দায়িত্ব নিয়ে এই ইংলিশ কোচ তরুণ ক্রিকেটারদের খেলা শেখানোর পাশাপাশি পুরো কোচিং স্টাফদের খেলা শেখানোর কৌশল বুঝিয়ে দিচ্ছেন।

দীর্ঘ আন্তর্জাতিক কোচিং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে পাইবাস মনোযোগ দিচ্ছেন দক্ষতা বাড়ানো, টি-টোয়েন্টি থেকে দীর্ঘ ফরম্যাটে খেলার মধ্যে সেতুবন্ধন গড়ে তোলার কাজে। এছাড়া দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে হাই-পারফরম্যান্স সংস্কৃতি গড়ে তুলতেও কাজ করছেন তিনি।

সম্প্রতি দেশের স্বনামধন্য জাতীয় পত্রিকা ডেইলি সানের কাছে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কে কাজের অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশ ক্রিকেট ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন তিনি।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে ফিরে আসায় আপনাকে বেশ খুশি মনে হচ্ছে।

আমার মনে হয় আপনি এখানে কাজ করা বেশ উপভোগ করছেন।

রিচার্ড পাইবাস : অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। আমি আগেও বলেছি- বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্কের সুবিধা আমার দেখা সেরা ক্রিকেট সুবিধাগুলোর একটি। তাদের কাছে বড় জায়গা আছে, আবার বাংলাদেশের মতো গরম, বৃষ্টি আর আর্দ্রতার দেশে এমন ইনডোর সুবিধা সত্যিই দারুণ।

বর্ষা মৌসুমেও অনুশীলন চালিয়ে যাওয়া যায়। মানসম্মত ক্রিকেটার তৈরি করতে হলে মানসম্মত সুযোগ-সুবিধা দরকার। এখানে সব সুবিধা আছে, খেলোয়াড়দের জন্য তা বড় আশীর্বাদ। এছাড়া বসুন্ধরার দৃষ্টিভঙ্গিও প্রশংসার যোগ্য। পাশাপাশি আউটডোর সুবিধাগুলোও অসাধারণ।

সব মিলিয়ে বসুন্ধরা ক্রিকেট নেটওয়ার্ক এটা একটা পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট হাব হয়ে উঠছে।

প্রশ্ন: এখন পর্যন্ত কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

রিচার্ড পাইবাস : প্রতিটি জায়গাতেই প্রতিভা থাকে। আসল প্রশ্ন হলো— ওই প্রতিভা দিয়ে আপনি কী করেন। এখানে দারুণ কিছু তরুণ খেলোয়াড়ের সঙ্গে কাজ করছি। সবচেয়ে ভালো লাগছে, আমাদের প্রোগ্রামটা সম্পূর্ণ জেন্ডার নিউট্রাল। ছেলে-মেয়ে সবাই সমানভাবে খুব সম্মানজনক পরিবেশে কাজ করছে। যেসব মেয়েরা ক্রিকেট খেলতে চায়, তাদের জন্য এটা অসাধারণ জায়গা। এখানে জাতীয় দলের ক্রিকেটার আছে, প্রথম-শ্রেণির খেলোয়াড় আছে, আবার একেবারে শুরুর স্তরেরও আছে। গত কয়েক মাস ধরে মূলত বেসিক স্কিল উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছি। বড় চ্যালেঞ্জ হলো, নতুন প্রজন্ম ছোটবেলা থেকেই অনেক টি-টোয়েন্টি খেলে। চার-ছক্কা মারা সহজাত হয়ে যায়, কিন্তু ওয়ানডে বা টেস্টের মতো দীর্ঘ ফরম্যাটে কৌশল বদলানো, টেম্পো নিয়ন্ত্রণ করার মতো বিষয়গুলো শিখতে সময় লাগে। ওই জায়গাটা পূরণ করাই এখন জরুরি।

প্রশ্ন: একসঙ্গে জাতীয় দলের খেলোয়াড় থেকে শুরু করে একেবারে নতুনদের নিয়ে কাজ করেন। কীভাবে ভারসাম্য রাখেন?

রিচার্ড পাইবাস : খেলোয়াড়দের বিভিন্ন দলে ভাগ করে দিয়ে কাজ করি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা, প্রথম-শ্রেণির খেলোয়াড়দের জন্য তাদের উপযোগী প্রোগ্রাম। আর জুনিয়ররা মূলত ক্রিকেটের মৌলিক বিষয়গুলো শিখছে। ইনডোরে আমরা দক্ষতা ও কৌশল নিয়ে কাজ করি, তারপর মাঠে নিয়ে সেটার প্রয়োগ করি। এখানে প্রচুর টার্ফ উইকেট আছে, যা একটি বিশাল সুবিধা। ঢাকার অনেক একাডেমিতেই শুধু নেট আছে, কিন্তু এখানে নেটের সঙ্গে মাঠও আছে। খেলোয়াড়দের উন্নতির জন্য দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক, ঘরোয়া ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এত দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারের পর এই অধ্যায়টা আপনি কীভাবে দেখছেন?

রিচার্ড পাইবাস : আমাকে এখানে এসে এই কাজে অবদান রাখার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, আর তাদের লক্ষ্য শুনে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। সুবিধাগুলো দেখে এবং প্রোগ্রামের পরিধি বুঝে আমি দারুণ উত্তেজিত ছিলাম। বহু বছর ধরে কোচিং করছি -কত বছর, সেটা বলব না (হাসি)! তবে এখনো দারুণ লাগে। যারা আন্তরিক, উন্নতি করতে চায় -এমন খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করার আনন্দ আলাদা। একই সঙ্গে স্থানীয় কোচদেরও সাহায্য করছি। তাদের শেখার আগ্রহ আমাকে আমার তরুণ বয়সের কথা মনে করিয়ে দেয়। আসলে এটা আমার কাছে ভালোবাসার কাজ -জ্ঞান ভাগাভাগি করা, খেলোয়াড়-কোচদের উন্নতি দেখা।

প্রশ্ন: ২০১২ সালে স্বল্প সময়ের জন্য বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন। তখনকার অনেক তারকাই এখন অবসর নিয়েছেন বা ক্যারিয়ারের শেষ পর্যায়ে। আবার দেখা হওয়ায় কেমন লাগছে?

রিচার্ড পাইবাস : দারুণ লাগছে। বিজয় (এনামুল হক)-এর সঙ্গে দেখা হলো, শুনেছি মুশফিক (মুশফিকুর রহিম) শিগগিরই আসবেন। তখনকার অনেকেই এখন সিনিয়র ক্রিকেটার। ওদের সঙ্গে আমার অনেক সুন্দর স্মৃতি আছে। ওরা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিল -ভালো স্থানীয় ক্রিকেটার থেকে প্রকৃত আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেটার হয়ে উঠেছিল। এই প্রোগ্রামের তরুণরাও নিশ্চয়ই একদিন তাদের উত্তরসূরি হয়ে উঠবে।

পিএ/টিএ 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দেশ রক্ষার ক্ষমতা শুধু বিএনপির আছে : শামসুজ্জামান দুদু Sep 06, 2025
লাখো মুসলমানের অংশগ্রহণে ঐতিহাসিক জশনে জুলুস Sep 06, 2025
ভিপি পদে কারা এগিয়ে? জানালো ঢাবি শিক্ষার্থীরা Sep 06, 2025
img
ইউএস ওপেন ফাইনালে উপস্থিত থাকবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প Sep 06, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ২ জনের, হাসপাতালে ভর্তি ৩৬৪ Sep 06, 2025
img

রিজওয়ানা হাসান

সিলেটের পাথর মহল এলাকাগুলোয় আগে থেকেই পাথর উত্তোলন করা হচ্ছিল Sep 06, 2025
img
রাজনীতির ওপরে সব কিছুরই মারাত্মক প্রভাব আছে : খালেদ মুহিউদ্দীন Sep 06, 2025
img
কেন্দ্র দূরে সরিয়ে ভোট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চেষ্টা চলছে: আব্দুল কাদের Sep 06, 2025
img
টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের পর যে বার্তা দিলেন স্টার্ক Sep 06, 2025
img
জাতীয় পার্টির অফিসে হামলায় গণ অধিকার পরিষদ জড়িত নয় : রাশেদ খান Sep 06, 2025
img
মাত্র ২০ দিনেই থেমে গেল ‘ওয়ার ২’-এর যাত্রা Sep 06, 2025
img
ক্যাসিনো কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধান গ্রেপ্তার Sep 06, 2025
img
জামায়াত নেতার বক্তব্য প্রত্যাখান চবি শিবিরের Sep 06, 2025
img

মোস্তাফিজার রহমান

ক্লিন ইমেজ আওয়ামী লীগ নেতাদের মনোনয়ন দেবে জাপা Sep 06, 2025
img
সালমান শাহ’র স্মরণে শাকিব খানের বার্তা Sep 06, 2025
img

উপদেষ্টা আসিফ

নির্বাচন নয়, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে Sep 06, 2025
img
দুয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে : আমিনুল হক Sep 06, 2025
থামানো যাচ্ছে না ‘কার্যক্রম নিষি'দ্ধ' আ.লীগের ঝটিকা মিছিল Sep 06, 2025
মেঘনা নদীতে জলদস্যুদের হাত থেকে বেঁচে ফেরার করুন গল্প! Sep 06, 2025
img

উপদেষ্টা আসিফ

আদালত ইনসাফের জায়গা, সেখানে সাংবাদিকের ওপর হামলা নিন্দাজনক Sep 06, 2025