টাঙ্গাইলের বাসাইলে কাদেরিয়া বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা ও ছাত্র সমাবেশের ব্যানারে একইস্থানে সমাবেশের আহ্বান করেছে। আগামীকাল রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে একই সময়ে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সমাবেশকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
যেকোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহীদ মিনার চত্বরে কাউকেই সমাবেশ ও প্রবেশের সুযোগ দেবে না পুলিশ প্রশাসন।
লিখিত আবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত ১ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর মুক্তিযুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার কাজী আশরাফ হুমায়ুন বাঙ্গাল লিখিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে প্রয়োজনীয় যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন। তিনি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বাসাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে অনুলিপি দেন। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী (বীরউত্তম)।
এদিকে, ছাত্র সমাজের ব্যানারে একইস্থানে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ৫ সেপ্টেম্বর লিখিত আবেদন করেছেন ছাত্র নেতাদের পক্ষে রনি মিয়া নামের এক ব্যক্তি।
সমাবেশটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারবিরোধী ছাত্র নেতাদের প্রতিনিধি আয়োজন করেছে। সমাবেশে অতিথি হিসেবে কে থাকবেন বিষয়টি বলা হয়নি।
পৃথক দুটি সমাবেশের আয়োজকরা পৌর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করেছে। একইস্থানে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ছাত্র সমাজের নেতাদের পক্ষে আবেদনকারী রনি মিয়া বলেন, সারা দেশে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে। যাতে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করতে না পারে, এজন্য আমরা ছাত্র সমাজ সমাবেশের ডাক দিয়েছি। এটা আমাদের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। আমাদের সমাবেশ খুবই শান্তিপূর্ণভাবে হবে। আশা করি, নির্ধারিত স্থানে সমাবেশ করার জন্য পুলিশ প্রশাসন আমাদের অনুমতি দেবে।
অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনের ছাত্র সমাজের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। আমরা জানতাম না সেখানে তারা (মুক্তিযোদ্ধারা) সমাবেশের ডাক দিয়েছেন।
যুদ্ধকালীন কোম্পানি কমান্ডার কাজী আশরাফ হুমায়ুন বাঙ্গাল বলেন, অনুমতি চেয়ে আমরা আগে আবেদন করেছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠান বানচালের জন্য তারা একইস্থানে সমাবেশ ডেকেছে। তারা আমাদের অনুষ্ঠানের আগে বা পরদিন সমাবেশ করতে পারতেন। তাদের সঙ্গে তো আমাদের কোনো প্রতিহিংসা নেই। ইতোমধ্যে আমরা অতিথিদের দাওয়াত দিয়েছি।
বাসাইল থানার ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, একইস্থানে কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও ছাত্র সমাজ সমাবেশের আহ্বান করেছে। এদিন যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা কাউকে শহীদ মিনারে অনুষ্ঠান করতে দেব না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ব্যক্তিকে শহীদ মিনারে প্রবেশ করতেও দেওয়া হবে না। আমরা তৎপর রয়েছি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমি ইউএনও স্যারকে ১৪৪ ধারা জারির অনুরোধ করেছি।
ইউএনও মোছা. আকলিমা বেগম জানান, একই তারিখ ও একই সময়ে দুই পক্ষ সমাবেশ করলে রক্তপাতসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ও জনসাধারণের জানমাল রক্ষার্থে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ আদেশ রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
ইউটি/টিএ