একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী দিলারা জামান। একজন গুণী অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে। মঞ্চ-টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে পেয়েছেন বিপুল ভালোবাসা। এখনো অভিনয় করে যাচ্ছেন।
তবে এ গুণী অভিনেত্রী সম্প্রতি তার ভক্তদের সতর্ক করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার নামে ফেক আইডি খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি। এ বিষয়ে আইনি সহায়তাও নিচ্ছেন এ বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
দিলারা জামান সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় নন।
তবে তার নামে বেশ কিছু আইডি ও পেজের দেখা মেলে। এবার এসব আইডি সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দিলেন এ অভিনেত্রী। জানালেন, তিনি ফেসবুক ব্যবহার করেন না।
এ বিষয়ে দেশের একটি গণমাধ্যমকে দিলারা জামান বলেন, ‘আমার কোনো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই।
কে বা কারা আমার নামে অ্যাকাউন্ট খুলেছে, আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে আমি ভীষণ বিরক্ত ও ইনসিকিউর ফিল করছি।’
গণমাধ্যমে তিনি নিজের ভক্ত ও দর্শকদের উদ্দেশে বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার সব শুভাকাঙ্ক্ষী ও দর্শকদের বলতে চাই, ফেসবুকে আমার নামে যেসব পেজ বা আইডি রয়েছে, সবগুলোই আমার অনুমতি ছাড়া খোলা হয়েছে। এসব ভুয়া আইডি থেকে প্রকাশিত কোনো পোস্ট বা বার্তায় বিভ্রান্ত হবেন না বা প্রলুব্ধ হবেন না।
আইনের আশ্রয় নিয়েছেন জানিয়ে দিলারা জামান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি ইতিমধ্যে সাইবার ক্রাইম ইউনিটে জানিয়েছি।’
১৯৬৬ সালে ‘ত্রিধরা’ নাটক দিয়ে অভিনয় জীবনের শুরু করেন দিলারা জামান। পর্দায় তাকে মায়ের চরিত্রেই বেশি দেখা যায়। বেশিরভাগ অভিনয়শিল্পী তাকে মা বলেই ডাকেন। তিনি ১৯৪৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর তার পরিবার যশোর জেলায় চলে আসেন। ঢাকার বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ইডেন মহিলা কলেজে পড়াশোনা করেন।
দিলার জামান বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক ফখরুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৬৬ সালে ত্রিধরা নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশনে অভিনয় যাত্রা শুরু। নাটকের পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। ১৯৯০ এর দশকে তিনি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র চাকা (১৯৯৩) এবং আগুনের পরশমণি (১৯৯৪) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
তিনি ব্যাচেলর (২০০৪), মেড ইন বাংলাদেশ (২০০৭), চন্দ্রগ্রহণ (২০০৮), প্রিয়তমেষু (২০০৯), ও মনপুরা (২০০৯) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ২০০৮ সালের চন্দ্রগ্রহণ চলচ্চিত্রে ময়রা মাসী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত হন।
এএইচ/টিএ