ফ্রান্সে সরকারবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল রাজপথ, শতাধিক গ্রেপ্তার

নতুন পেনশন সংস্কার আইনের প্রতিবাদে ফ্রান্সে ব্যাপক সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ‘ব্লক এভরিথিং’ নামে শুরু হওয়া আন্দোলন থেকে শতশত বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর ডাকা এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে রাস্তা, রেললাইন এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন অবরোধ করা হয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার সম্প্রতি পেনশন সংস্কার আইন পাশ করেছে। যেখানে অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত সারা দেশের শ্রমিক, ছাত্র এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। প্রতিবাদকারীরা মনে করছেন, এই আইন শ্রমজীবীদের অধিকার খর্ব করবে এবং কর্মজীবনের চাপ বাড়িয়ে দেবে।

প্রতিবাদের অংশ হিসেবে বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন শহরে রাস্তা, সেতু এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেন। প্যারিস, মার্সেই, লিয়োঁ এবং অন্যান্য বড় শহরের কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে, আবর্জনা স্তূপ করে এবং পুলিশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। কিছু স্থানে দোকানপাট ও সরকারি ভবনে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

এই বিক্ষোভ দমনে পুলিশকে কঠোর অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিভিন্ন শহরে প্রায় ৩০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে তারা।

পুলিশ টিয়ার গ্যাস, জল কামান এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সহিংসতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে, শ্রমিক ইউনিয়নগুলো সরকারের এই দমন-পীড়নের তীব্র নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, যদি সরকার এই আইন প্রত্যাহার না করে, তাহলে আন্দোলন আরও জোরালো হবে। তারা আগামী দিনে আরও বড় কর্মসূচির ঘোষণার সতর্কতা দিয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ফ্রান্সে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এ আন্দোলন পরিস্থি আরও অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যা সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

বিক্ষোভকারীর প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ চেয়েছেন। আস্থাভোটে হেরে ফ্রাঁসোয়া বায়রু প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর সেবাস্টিয়েন লেকর্নুকে নতুন প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ফ্রান্সের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোও এক হয়েছে।

ইউটি/টিএ


Share this news on:

সর্বশেষ

img
ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্রকে হত্যার ঘটনায় মাদারীপুরে প্রতিবাদ মিছিল Dec 21, 2025
img
ইনকিলাব মঞ্চের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Dec 21, 2025
img
সুদানে মার্কেটে ড্রোন হামলায় নিহত ১০ Dec 21, 2025
img
মাইলি সাইরাস পেলেন বিশেষ সম্মাননা Dec 21, 2025
img
ভারতীয় আধিপত্যবাদের কবর রচিত হয়ে গেছে : পীর চরমোনাই Dec 21, 2025
img
কারাগারে বসে মনোনয়নপত্র নিলেন সাবেক এমপি Dec 21, 2025
img
তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি Dec 21, 2025
img
হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকবে বিএনপি : প্রিন্স Dec 21, 2025
img
প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ, তবু রাজস্বে ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি Dec 21, 2025
img
২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোটিং অ্যাপে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে Dec 21, 2025
img
আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ Dec 21, 2025
img
কে করবেন রাজশাহীর উইকেটকিপিং? মুশফিক নাকি আকবর? Dec 21, 2025
img
ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাসভবনে চুরি প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার সামগ্রী , আটক ৩ Dec 21, 2025
img
হাদি হত্যা: প্রধান আসামি ফয়সালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা Dec 21, 2025
img
নির্বাচন বানচাল করতেই ওসমান হাদিকে হত্যা: জুনায়েদ সাকি Dec 21, 2025
img
লালমনিরহাটে অনুপ্রবেশকারী বিএসএফ সদস্যকে ফেরত দিল বিজিবি Dec 21, 2025
img
শ্রীলঙ্কায় ভূমিধস নিয়ে সতর্কবার্তা, বাংলাদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ Dec 21, 2025
img
ভক্তদের সঙ্গে নিজের জীবন দর্শন ভাগ করলেন ইশা সাহা Dec 21, 2025
img
ট্রাম্পকে ফিফার ‘পিস প্রাইজ’, আগেই ফিফার কাছে একগুচ্ছ শর্ত দেয় হোয়াইট হাউজ! Dec 21, 2025
img
হোয়াইট হাউসের ক্রিসমাস ডিনারে আমন্ত্রণ পাওয়া অবিশ্বাস্য এক অভিজ্ঞতা: মল্লিকা শেরওয়াত Dec 21, 2025