জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর কোম্পানি থেকে কেনা ব্যালট পেপার ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান। সেইসঙ্গে ভোট কারচুপিরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাওলানা ভাসানী হলে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদী হাসান বলেন, ‘ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্বাচন কমিশনার জামায়াতে ইসলামীর এক কোম্পানি থেকে ব্যালট পেপার ও ওএমআর মেশিন সরবরাহ করে। ছাত্রশিবিরকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে ভোট গণনায় কারচুপির বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে ওএমআর মেশিনে ভোট গণনার পরিবর্তে ম্যানুয়ালি ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু একই কোম্পানির ব্যালটপেপার দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’
ছাত্রশিবির তাদের কোম্পানি থেকে আলাদা করে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করে কারচুপির মাধ্যমে জয়ী হওয়ার জন্য নীলনকশা এঁকেছে বলেও অভিযোগ তোলেন ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি প্রার্থী।
তিনি বলেন, ‘নতুন ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের দাবি জানালে নির্বাচন কমিশন জামায়াতের কোম্পানির ব্যালট দিয়েই ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। এইরকম পক্ষপাতমূলক আচরণের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছি।’
নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে ও ছাত্রশিবিরের নীলনকশা বাস্তবায়নে অপচেষ্টা চালাবে না বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ সাদী।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুনতে পাচ্ছি জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মী ক্যাম্পাসের আশপাশে অবস্থান করছে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত।’
সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন।
বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ১০ জন।
ভোটাররা কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ৪০টি ব্যালটে ভোট দেবেন (টিক চিহ্ন দিবেন)। বিশেষ ওএমআর মেশিনে ভোট গণনা করা হবে।
জাকসুর মোট প্রার্থীর ২৫ শতাংশ ছাত্রী, বাকি ৭৫ শতাংশই ছাত্র। ভিপি পদে কোনো নারী শিক্ষার্থী প্রার্থী হননি। জিএস পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মেয়ে দুজন। আর চারটি পদে কোনো মেয়ে প্রার্থীই নেই। সবগুলো হল সংসদ মিলিয়ে মোট প্রার্থীর ২৪ দশমিক ৪ শতাংশ ছাত্রী। আর মেয়েদের হলগুলোর পাঁচটিতে ১৫ পদে প্রার্থীই নেই।
নির্বাচনে বাম, শিবির, ছাত্রদল ও স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মিলিয়ে সর্বমোট আটটি প্যানেল অংশ নিয়েছে।
পিএ/এসএন