মাসের মধ্যেই ক্ষমতা ছাড়বেন নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। দেশটির নবনিযুক্ত এই প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি ছয় মাসের বেশি সময় এ পদে থাকবেন না। তিনি বলেন, আমি এই দায়িত্ব চাইনি। রাজপথে মানুষের আওয়াজ শোনার পরই আমাকে এই পদ গ্রহণ করতে হয়েছে। শুক্রবার শপথ নেওয়ার পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় এসব বলেন সুশীলা কার্কি। খবর বিবিসির।
এক বিবৃতিতে সুশীলা কার্কি বলেন, আগামী বছরের ৫ মার্চ নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের কাছেই তিনি ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে সহিংসতায় ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার পতনের পরপরই কার্কিকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী করা হয়।
সুশীলা কার্কি বলেন, জেন জি প্রজন্মের চিন্তাভাবনা অনুযায়ী আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রজন্ম যা দাবি করছে তা হলো দুর্নীতির অবসান, সুশাসন ও অর্থনৈতিক সমতা।
গত ৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ দুই দিনের মধ্যেই সহিংসতায় রূপ নেয়। এ সময় সংসদ ভবনে আগুন দেওয়া হয়, রাজনীতিকদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়।
সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত সহিংসতায় ৭২ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে তিন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। রোববার অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি লজ্জিত। যদি এসব ধ্বংসযজ্ঞ নেপালিরাই করে থাকে, তবে কীভাবে তাদের নেপালি বলা যায়?
সুশীলা কার্কি নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি হিসেবে বেশ পরিচিত এবং তাকে সাধারণত সৎ ও নিরপেক্ষ ভাবমূর্তির মানুষ হিসেবেই দেখা হয়। তবে তিনি একেবারে বিতর্কের বাইরেও ছিলেন না। প্রায় ১১ মাসের প্রধান বিচারপতির মেয়াদে তার বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাবও আনা হয়েছিল।
এখন কার্কি ও তার মন্ত্রিসভার সামনে একাধিক বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, সংসদ ভবন ও অন্যান্য ধ্বংস হওয়া গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা পুনর্নির্মাণ করা এবং সেই সঙ্গে পরিবর্তন চাওয়া জেন জি প্রজন্মকে আশ্বস্ত করার দায়িত্ব এখন তাদের কাঁধে। নেপালের অনেকে আশঙ্কা করছেন, এই অস্থিরতায় দেশের নবীন গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হতে পারে।
এবি/এসএন