বিরূপ মনোভাব থাকায় সাক্ষ্য দেন মাহমুদুর রহমান: শেখ হাসিনার আইনজীবী

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিরূপ মনোভাব রয়েছে বলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। এমন মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি। এদিন জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ হয়।

আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন ইতিহাসবিদ। এজন্য ইতিহাসের মতোই নিজের জবানবন্দিতে বর্ণনা করেছেন। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছেন তিনি। মূলত নিজস্ব অভিমত থেকে এসব বলেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। আমি তার প্রায় সব কথারই জেরা করেছি।

তিনি বলেন, মাহমুদুর রহমান কোনো কিছু দেখেননি। আন্দোলনেও উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তিনি প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নন। বিভিন্ন বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজের জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। তবে শেখ হাসিনার প্রতি বিরূপ মনোভাব রয়েছে তার। কেননা তৎকালীন সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে মামলা হওওয়া জেল খাটতে হয়েছিল। এসব কারণে বিদ্বেষ প্রণোদিত হয়ে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ সরকারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাহমুদুর রহমান। তিনি কোনো কথাই সঠিক বলেননি।

নিজের মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করে স্টেট ডিফেন্সের এই আইনজীবী বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমার মক্কেল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাদের নির্দেশেও এসব হয়নি।

এদিন বেলা পৌনে ১১টা থেকে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হয়। এরপরই দ্বিতীয় দিনের মতো মাহমুদুর রহমানকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। দুপুর দেড়টায় তার জেরা শেষ হয়। বিরতির পর দ্বিতীয়য়ার্ধে নেওয়া হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য।

এর আগে, ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির হন নাহিদ। তবে মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় আজকের দিন ধার্য করা হয়। এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের ১৭ দিনের মতো এখন পর্যন্ত জবানবন্দি দিয়েছেন ৪৬ জন।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিমসহ অন্যরা।

এর আগে, ১৫ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ২০ মিনিট থেকে বিকেল পর্যন্ত মাহমুদুর রহমানের সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে এ মামলায় নাহিদ ইসলামের জবানবন্দির পরই সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

এদিকে আজ সকালেও কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার অন্যতম আসামি থেকে রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। তার উপস্থিতিতেই জবানবন্দি দিচ্ছেন সাক্ষীরা।

কেএন/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

এই চিড়া আপনি এখনই খান! অপরিচ্ছন্নতায় ভরা মহসীন হলের দোকান Nov 09, 2025
রাজনীতি ও অর্থনীতিতে মতুয়া সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানালেন আমীর খসরু Nov 09, 2025
কেন জামায়াত বাদে সব ইসলামী দলকে এক হওয়ার আহ্বান হেফাজত আমিরের? Nov 09, 2025
জুলাইয়ের মাধ্যমে তৈরি হওয়া জেনারেশন কাউকে ভয় পায়না-সাদিক কায়েম Nov 09, 2025
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন গয়েশ্বর চন্দ্র Nov 09, 2025
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে আবারও এক-এগারোর শঙ্কা রাশেদের Nov 09, 2025
নিবন্ধন ও ‘শাপলা কলি’ প্রতীক পাওয়ায় হাসনাতের এলাকায় এনসিপির আনন্দ শোভাযাত্রা Nov 09, 2025
img
বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি শহীদ পরিবারের সদস্যদের Nov 09, 2025
জামায়েতের কারনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছিল Nov 09, 2025
বিএনপি আলোচনায় বসতে রাজি নয়, জানালেন জামায়াত নেতা Nov 09, 2025
শাকিবের প্রতি মিনিটের দাম পৌনে দুই লাখ টাকা! Nov 09, 2025
img
নেত্রকোনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মী আটক Nov 09, 2025
img
নতুন আলোয় আলোকিত হচ্ছে বাংলাদেশ : শারমীন এস মুরশিদ Nov 09, 2025
img
ঢাকার নতুন ডিসি শফিউল আলম Nov 09, 2025
img
সৎ থাকলে সাফল্য আসবেই, বিশ্বাস শুভশ্রীর Nov 09, 2025
img
তারা ঐকমত্য কমিশনে গুন্ডামি করেছেন: সামান্তা শারমিন Nov 09, 2025
img
বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হবে আ.লীগ-জাপা: নুর Nov 09, 2025
img
বিএনপিতে চাঁদাবাজ ও জুলুমবাজদের স্থান নেই : নয়ন Nov 09, 2025
img
মধ্যরাতে পুরান ঢাকার বংশালে আগুন Nov 09, 2025
img
সরকার আসে, সরকার যায়-কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না : শহিদুল ইসলাম বাবুল Nov 09, 2025