বাংলাদেশে মার্কিন সেনা নিয়ে কেন এত গুজব, প্রশ্ন জাহেদ উর রহমানের

সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি দল বাংলাদেশে আসা ও যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়াকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুঞ্জন ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দাবি করা হচ্ছে যে, মার্কিন সেনাবাহিনী বাংলাদেশ এসেছে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই, হোটেলে উঠেছে নিয়মবিধি না মেনে। এই গুজব শুধু বাংলাদেশে নয়, ভারতে ও হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে তিনি এ প্রসঙ্গে কথা বলেন।

তিনি বলেছেন, এটি একটি স্বাভাবিক যৌথ মহড়া হলেও, শুরুতে সরকারি পর্যায় থেকে কোন ধরনের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি, যা গুজব ছড়িয়ে পড়ার একটি বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন। ভারতের সাংবাদিক পালকি শর্মা একটি ভিডিওতে বলেছেন, এ মহড়া গোপন কিছু নয় বরং একটা ফ্রেমিং। তার মতে, ভারতে কিছু গোষ্ঠী ও মিডিয়া এই ঘটনাকে একটি ন্যারেটিভ বানিয়ে দিচ্ছে যাতে রাজনৈতিক তত্ত্ব ও তত্ত্ব বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। পালকি যুক্তি দিচ্ছেন যে, এটা শুধুই আবহাওয়া গরম করার রূপ, যাতে ভারতীয় দর্শকদের মধ্যে উদ্বেগ ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

তিনি আরো বলেন, এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। অতীতেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলিটারি এক্সারসাইজ হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনার সরকার যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েনের মধ্যেও ছিল, তখনও এ ধরনের যৌথ মহড়া হয়েছে। কিন্তু এবার বিষয়টি অস্বাভাবিকভাবে চাপা রাখা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ভারতের এই ফ্রেমিংটি কেবল রাজনৈতিক স্বার্থে তৈরি, যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের মতো। তিনি বলেন, আমরা বহুবার দেখেছি, ভারতের কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশে মৌলবাদী উত্থান, সেনা হস্তক্ষেপ, বা বিদেশি চক্রান্তের গল্প বানিয়ে তা নিজেদের নিরাপত্তা হুমকির অংশ হিসেবে তুলে ধরে। তিস্তা প্রকল্প, চীনের আগ্রহ এবং ভারতের অস্বস্তি নিয়েও জাহেদ উর রহমান আলোকপাত করেছেন। তার মতে, ভারতের অনেকেই মনে করেন শেখ হাসিনার সরকারকে নির্বাচনের সময় সহায়তা করে তারা একটি প্রতিদান পাবে, যার মধ্যে একটি ছিল তিস্তা প্রকল্প চীনের হাতে না যাওয়া। সেই প্রেক্ষাপটে এই মহড়াকেও ভারত সংকেতপূর্ণ হিসেবে দেখছে।

তিনি বলেন, আমাদের নাগরিকদের দরকার তথ্যভিত্তিক বোঝাপড়া। মিলিটারি চুক্তি, যৌথ মহড়া, কূটনৈতিক টানাপোড়েন এসব কিছু স্বাভাবিক অংশ। কিন্তু তা গোপন রেখে, অর্ধেক জানিয়ে, সামাজিক মাধ্যমে অযথা গুজব তৈরি করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা একেবারেই অনভিপ্রেত।

তিনি আরো বলেন, আমরা চাই স্বচ্ছতা, চাই দায়িত্বশীল আচরণ। আমেরিকা বা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যাবে না , এমন কথা নয়। তবে সেটা দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই হতে হবে। আর সেটি হতে হবে জনসম্মুখে, খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে।

এসএন 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার কড়া বার্তা, ভারত-চীনকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই Sep 19, 2025
img
সালমান শাহর জন্মদিনে শাবনূরের আবেগঘন বার্তা Sep 19, 2025
img
পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে যোগ দিতে পারবে অন্যান্য দেশও Sep 19, 2025
img
পুরো কৃতিত্ব দিতে চাই বাংলাদেশকে, যারা সুপার ফোরে যাচ্ছে, সাথে শ্রীলঙ্কাকেও : আফগান কোচ Sep 19, 2025
img
নিউইয়র্ক কনস‍্যুলেটে আওয়ামী লীগের হামলার ঘটনায় একাধিক ব‍্যক্তি গ্রেপ্তার Sep 19, 2025
img
রোববার আংশিক সূর্যগ্রহণ, দেখা যাবে না বাংলাদেশ থেকে: আইএসপিআর Sep 19, 2025
img
শুক্রবার থেকে বন্ধ হচ্ছে বগুড়ার মধুবন সিনেমা হল Sep 19, 2025
img
চাকসু নির্বাচনে ১০টি প্যানেল চূড়ান্ত, মনোনয়নপত্র জমা ও গ্রহণ শেষ Sep 19, 2025
img
রাকসু নির্বাচন ঘিরে নির্বাচনী প্রচারণা জোরদার, পোষ্য কোটা নিয়ে উত্তেজনা Sep 19, 2025
img
নির্বাচন কি আসলেই হবে? প্রশ্ন ইলিয়াস হোসাইনের Sep 19, 2025
img
রাষ্ট্রীয় বাজেটে কাটছাঁট, বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স Sep 19, 2025
img
অপেশাদারিত্ব নয়, নিজের ইচ্ছেতেই 'কল্কি' থেকে সরে গেলেন দীপিকা Sep 19, 2025
img
আমদানি বাড়াতে দেরি হলে বেঁকে বসবে ট্রাম্প প্রশাসন, চিন্তিত ব্যবসায়ীরা Sep 19, 2025
img
১১ দিন পর বন্ধ হলো কাপ্তাই বাঁধের সব জলকপাট Sep 19, 2025
img
সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারের সঙ্গে দক্ষ কর্মী প্রেরণ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিএনপির আলোচনা Sep 19, 2025
img
নেটদুনিয়া এখন ‘ন্যানো ব্যানানা এআই শাড়ি’ ফ্যাশন ট্রেন্ডে Sep 19, 2025
img
সামাজিক মাধ্যমে কাঞ্চনকে গালি, কড়া পদক্ষেপ নিলেন শ্রীময়ী Sep 19, 2025
img
ভারত-পাকিস্তানের হ্যান্ডশেক বিতর্ক এড়াতে আইসিসির নতুন পদক্ষেপ Sep 19, 2025
img
পাকিস্তানের সঙ্গে ন্যাটোর সমমর্যাদার চুক্তিতে উচ্ছ্বসিত সৌদি সংবাদমাধ্যম Sep 19, 2025
img
বৈষম্যবিরোধী চেতনা বাস্তবায়নের নজির বিরল: টিআইবি নির্বাহী পরিচালক Sep 19, 2025